পুলিশকে রান্না করে খাওয়ালেন বিক্ষোভকারীরা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:৫০
অ- অ+

ভারতের কলকাতা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিতর্কিত ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী’ বিল নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। ইতোমধ্যে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে রাজ্যের ৬টি জেলায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।

কিন্তু এরই মধ্যে রাজ্যের ২৪ পরগণার আমডাঙা-কামদেবপুরের আন্দোলনকারীরা সৌহার্দের পরিচয় দিয়েছেন।

সেখানে বিক্ষোভ চলাকালে অনেক গাড়ি আটকা পড়ে। কিন্তু দুপুর গড়ানোর আগেই হঠাৎ দেখা যায় মোটর ভ্যানে চাপিয়ে কয়েক ডজন বিরিয়ানি তৈরি করার বিশাল বিশাল হাঁড়ি চলে আসে কামদেবপুরের মোড়ে, জাতীয় সড়কের উপরে। খানিকক্ষণের মধ্যেই ভ্যানে করে আনা হয় বেশ কয়েক বস্তা মিষ্টি কুমড়ো, ফুলকপি, মূলো, সিমের মতো শস্য।

ঘটনাস্থলে মোতায়েন পুলিশ কর্মীরাও অবাক হয়ে যান। তাঁরাও বুঝতে পারছিলেন না কী হতে চলেছে। তারপর বিক্ষোভকারীদেরই একাংশ রাস্তার পাশে উনুন খুঁড়ে হাঁড়ি চাপিয়ে শুরু করে দেন রান্নার কাজ। একদিকে যেমন সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে রাস্তা অবরোধ করে চলতে থাকে স্লোগান, তখন অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের অন্য একটা অংশ ব্যস্ত আলু, কুমড়ো ছাড়িয়ে কাটাকুটিতে। কেউ বা চাল-ডাল ধুতে।

মুজাফফর নামক এক বিক্ষোভকারীকে প্রথমে এই ঘটনার কারণ জানতে চাইলে তিনি মুচকি হেসে বলেন,‘‘একটু অপেক্ষা করুন।”

এ দিকে ততক্ষণে কয়েক ডজন হাঁড়ি থেকে বেরুচ্ছে শীতের আনাজ দেওয়া খিচুড়ির গন্ধ। শীতের দুপুরে খিচুড়ির গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে রাস্তায় বসে থাকা অবরোধেও একটু উসখুস ভাব। তার পরেই ডাক এল।

জাতীয় সড়কের উপরেই লম্বা জায়গা তড়িঘড়ি পরিষ্কার করে মুখোমুখি দুটি পংক্তি বসানোর ব্যবস্থা। অবরোধকারীরাই হাতে হাতে বিলি করলেন শালপাতা। শুধু বিক্ষোভকারীরাই নন। খিচুড়ির ভাগ পৌঁছল অবরোধে আটকে পড়া ট্রাক বা গাড়ির চালকদের কাছেও। বাদ যাননি পুলিশ কর্মীরাও। শীতের দুপুরের রোদ পিঠে লাগিয়ে তখন জাতীয় সড়কের উপরে চলছে রীতি মতো চড়ুইভাতি।

অবরোধে-বিক্ষোভে প্রথম সারিতে ছিলেন অশোকনগর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওবাইদুল্লা মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সরকারের নীতির বিরোধিতা করি। কেন্দ্রীয় সরকার এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এনে গোটা দেশে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভেদ আনতে চাইছে। আমরা সেই বিভাজনের বিরুদ্ধে।”

ওবাইদুল্লার সঙ্গী ইবাদুলের কথায়,‘‘সবাই যখন হিংসায় মত্ত, তখন আমরা দেখাতে চাই এ ভাবেও প্রতিবাদ করা যায়। রাস্তায় যাঁরা আটকে পড়েছেন তাঁদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়াও আমাদের কাজ।”

তবে সে সব কিছুর পাশাপাশি, অবরোধ প্রতিবাদের উদ্যোক্তাতারা এটাও মানেন যে, মারামারি না করে, এ ভাবে একটা আমোদ-খাওয়া দাওয়ার আয়োজন রাখলে আন্দোলনে লোকও আসবে বেশি, জোরদার করা যাবে কর্মসূচি।

এক পুলিশ কর্তা সব দেখে শুনে বলেন,‘‘সে যাই হোক উদ্দেশ্য, খারাপ তো হচ্ছে না।” বেলা ৩টে নাগাদ খাওয়া দাওয়া পর্ব মেটার পর পুলিশের অনুরোধে উঠে যায় অবরোধ। জাতীয় সড়কের পাশে শুরু হয় প্রতিবাদ সভা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

(ঢাকাটাইমস/১৫ডিসেম্বর/আরআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাকাসহ ১১ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস
ভেষজ আনারস ক্যানসার প্রতিরোধে সিদ্ধহস্ত, শরীরের ওজনও কমায়
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ১১০ জন
ড. ফয়জুল হককে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা