মধু চাষে স্বাবলম্বী কুষ্টিয়ার মামুন

বানিজ্যিকভাবে ভ্রাম্যমাণ মধু খামার করে মামুন-অর-রশিদ ওরফে মধু মামুন আজ স্বাবলম্বী। মামুন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গেটপাড়া গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। তার ১১ জন কর্মচারী রয়েছেন। তারা সারাবছরই মধু উৎপাদন করেন।
মামুন জানান, ১৯৯৭ সালে মাত্র চারটি মধুর বক্স নিয়ে শুরু সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা শুরু করি। ১৯৯৮ সালে আমি মাস্টার্স পাস করে চাকরির আশা না করে শুরু করি মধু চাষ। এখন আমার খামারে ১৫০টি মধুর বক্স রয়েছে। এখন এগুলোর এক একটির মূল্য সাত থেকে আট হাজার টাকা। ২০১৫-১৬ বছরে আমি আমার খামার থেকে নয় টন মধু পেয়েছিলাম। ২০১৬-২০১৭ বছরে আমি ১০ টন মধু পেয়েছিলাম। ২০১৭-২০১৮ বছরে আমি ১২ টন মধু পেয়েছিলাম। এ বছরে আমি ১৪ টন মধু পাব বলে আশা করছি। খরচ বাদ দিয়ে ছয়-সাত লাখ টাকা লাভ হবে। নভেম্বর থেকে কুষ্টিয়ার মিরপুর, বিত্তিপাড়া ও নাটোরের চলনবিলে সরিষা ফুলের মধু, শরীয়তপুরে কালজিরার মধু আর নাটোরের গুরুদাসপুরে লিচু ফুলের মধু সংগ্রহ করি।
বর্তমানে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবাইল ইউনিয়নের ধুবাইল মাঠে মামুন আরও একটি মধু খামার স্থাপন করেছেন। এ মাঠে ৩০টি বক্স আছে। লক্ষ্যমাত্রা ৪০০ কেজি।
তিনি জানান, গতবছর খামারসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা এবং কোম্পানির কাছে ৩০০ টাকা কেজি দরে মধু বিক্রি করেছি। এছাড়া আমার খামার থেকে প্রতিমাসে ১০০ কেজি করে মধু অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয়। বেশিরভাগ কোম্পানি স্বল্প মূল্যে কিনে নিয়ে তাতে কেমিকেল মিশিয়ে চড়া দামে বিক্রি করে।
তিনি আরও বলেন, গাছি মধু সংগ্রহকারীরা মৌচাকে চাপ দিয়ে মধু সংগ্রহ করে। এতে মধুর গুনাগুন ৪০% নষ্ট হয়ে যায়। আর আমার খামারে মধু সংগ্রহের যন্ত্রের সাহায্যে বাতাস দিয়ে মধু সংগ্রহ করি। এতে আমাদের মধুর গুনাগুন অক্ষুণ্ন থাকে।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, মামুন এই উপজেলার মডেল মৌ-খামারি। মধু চাষ করে সে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই মধু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। সেই সাথে মধু খামার স্থাপনের ফলে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সরকারিভাবে বিক্রির কোন ব্যবস্থা হলে মৌ-খামারিরা বেশি লাভবান হতে পারবে।
(ঢাকাটাইমস/০৪জানুয়ারি/পিএল/এলএ)

মন্তব্য করুন