অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে বরিশাল, পানিবন্দি লাখো মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০২৫, ১২:১৯| আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৫, ১৩:৪৫
অ- অ+

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে অস্বাভাবিক জোয়ার দেখা দিয়েছে। নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বরিশাল নগরীর নিম্নাঞ্চল এবং উপকূলীয় জেলার অসংখ্য গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের কীর্তনখোলা, তেঁতুলিয়া, মেঘনা, সুরমা, সুগন্ধা, বিষখালী, পায়রা, বলেশ্বর, আড়িয়াল খাঁ, ধানসিঁড়ি ও গাবখানসহ প্রায় সব নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে যায়।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। এতে নগরীর পলাশপুর, মোহাম্মদপুর, কেডিসি, রসুলপুর, ভাটিখানা, কাউনিয়া, ধান গবেষণা রোডসহ বিভিন্ন এলাকা ডুবে গেছে। পাশাপাশি সদর উপজেলার চরবাড়িয়া, শায়েস্তাবাদ, টুঙ্গিবাড়িয়া ও চরকাউয়ার বিশাল অংশ প্লাবিত হয়েছে।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মিলন হাওলাদার জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে ২৪ ঘণ্টায় ২৪.০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম না করা পর্যন্ত পানি আরও বাড়তে পারে এবং ১ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।

বরিশালের পাশাপাশি বরগুনা, পটুয়াখালী, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, বাকেরগঞ্জ, বাবুগঞ্জ, মুলাদী এবং ভোলা জেলার প্রায় সব উপজেলায় নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি।

বিশেষ করে ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান, ধানসিঁড়ি ও হলতা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ মিটার পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে জেলার অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

রাজাপুরের বড়ইয়া, বাদুরতলা, নাচনমহল এবং কাঁঠালিয়ার আমুয়া, পাটিকালঘাটা, নলছিটির ভবানিপুর ও নিজামিয়া গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানির তোড়ে ভেসে গেছে গরু-ছাগলসহ গৃহপালিত প্রাণী। ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ইতোমধ্যেই পানিবাহিত রোগের শঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

বরিশাল নদীবন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি নদীবন্দরে সতর্কতা সংকেত জারি রয়েছে। স্পিডবোট চলাচল বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হলেও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপটি অতিক্রম না করা পর্যন্ত জোয়ারের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। উপকূলীয় এলাকায় তিন ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

(ঢাকাটাইমস/২৬ জুলাই/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
চুয়াডাঙ্গায় দিনমজুরকে গলা কেটে হত্যা
মা হারালেন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সেক্রেটারি উজ্জল
মানব পাচারের গল্প নিয়ে আসছে ‘ফিল্ডস অব ফ্রিডম’
এবার ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ওয়ালটনের ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা