মাথার খুশকি দূর করবেন কীভাবে

ফিচার প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ১২:৪৯ | প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:২৫

মাথায় খুশকি হলে ছোট ছোট আঁশের মতো মরা চামড়া উঠতে থাকে। ফলে মাথার চামড়া চুলকায়। চুল আচড়ালে খুশকি ঝরতে থাকে। মূলত মাথার ত্বকের শুষ্কভাবের কারণে খুশকি হয়ে তাকে। শীতকালের আবহাওয়া আর্দ্র হওয়ায় ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়।

কোনো ব্যক্তি যদি দিনের বেলায় খুব অল্পবারের জন্য তার চূল আচড়ান তবে তার মাথায় মৃত ছোট ছোট চামড়া জমতে থাকে। খুশকি সমস্যার সৃষ্টি হয়। যাদের ত্বক এলার্জেটিক তাদের খুশকির প্রবণতা বেশি। সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি ও ত্বক এক অপরের সঙ্গে বিপরীত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে খুশকি উৎপাদন করতে পারে।

পর্যাপ্ত পরিমাণ শ্যাম্পু না করলে মাথার ত্বক অপরিষ্কার হয়ে পড়ে। যা থেকে খুশকির উৎপত্তি হতে পারে। খাদ্যভাসের কারণেও খুশকি হতে পারে। মূলত ভিটামিন বি ও জিংক গ্রহণ না করলে খুশকি হয়। যারা অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকেন তাদের মধ্যে খুশকির প্রবণতা বেশি। কিছু বিশেষ রোগ যেমন পার্কিন্সন, হৃদরোগ, স্টোক খুশকির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যারা অপেক্ষাকৃত কম গোসল করেন তাদের মাথা থেকে ময়লা কম পরিষ্কার হয় এবং মরা চামড়া জমে খুশকি হতে পারে। যাদের জটিল রোগ যেমন এইচ.আই.ভি আছে তাদের খুশকি হতে পারে।

খুশকি পরিত্রাণে ঘরোয়া সমাধান:

নারিকেল তেল

নারিকেল তেলের মধ্যে থাকা ফাংগাস বিরোধী উপাদান খুসকি আটকায়। তাই এই তেলের ব্যবহার করলে খুসির পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। পাঁচ ফোঁটা নারিকল তেলের সঙ্গে পাঁচ থেকে দশ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণ দিয়ে মাথার তালু ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এই ম্যাসাজ রাতে করাই ভালো।

তারপর সারা রাত মাথা ধোয়া যাবে না। একেবারে সকালে শ্যাম্পু করে মাথা ধুয়ে নিন। মনে রাখবেন, সারা রাত মাথা এই তেলের মিশ্রনে মাখানো থাকলে খুসকি সারবে সহজে। কিন্তু হাতে সময় কম থাকলে, সেই সুযোগ কম। সেক্ষেত্রে অন্তত ৩০ মিনিট মাথা মাখিয়ে রাখুন তেলের মিশ্রণে। তাতেও কাজ হবে।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডাও খুব ভালো মানের অ্যান্টিফাংগাল। তাই এর ব্যবহারেও খুশকির পরিমাণ কমে। স্বাভাবিকভাবে মাথা ধুয়ে নিন। তারপর মাথায় বেকিং সোডা লাগিয়ে নিন। মাথার তালুতেই প্রধানত লাগাবেন এই সোডা। সোডা দিয়ে তালু ম্যাসাজ করলে খুব ভালো হয়। এক-দু'মিনিট এই অবস্থায় রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন। খুশকির পরিমাণ কমবে।

টক দই

টক দই খুসকির কমানোর জন্য খুবই কার্যকর। অল্প পরিমাণে টক দই (মাথার তালুর পুরোটা ঢাকতে যতটা লাগতে পারে) খোলা অবস্থায় রেখে দিন এক-দু'দিন। এর মধ্যে ফারমেনটেশন হওয়ার সময় দিন। তারপর মুখে যেভাবে মাস্ক লাগান, সেভাবেই মাথার তালুতে মাস্কের মতো করে এই ফারমেনটেড টক দই লাগিয়ে নিন। এই অবস্থায় এক ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর খুব হালকা শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন। মনে রাখবেন, এই হালকা শ্যাম্পুর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। খুসকি খুব বিরক্তিকর বটেই। কিন্তু মনে রাখবেন, একে সামলানো কঠিন নয়। ওপরে লেখা যে কোনও পদ্ধতি বা একাধিক পদ্ধতির ব্যবহার করে খুসকি থেকে সহজেই নিরাময় পাওয়া যায়।

গ্রিন টি

বাড়িতে গ্রিন টি যদি থাকে, তাহলে কিনে নিন পেপারমিন্ট এসেনসিয়াল অয়েল আর হোয়াইট ভিনিগার। গ্রিন টি একটি পাত্রে ফুটিয়ে নিন। তার সঙ্গে মিশিয়ে নিন দু-তিন ফোঁটা পেপারমিন্ট এসেনসিয়াল অয়েল। এই মিশ্রণে এক চামচ হোয়াইট ভিনিগার মেশান। তারপর রেখে দিন ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত। যখন মাথা ধোবেন, তখন মাথা ধোওয়ার পরে এই মিশ্রণ দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন। মাথায় মাসাজ করুন এরপর। এরপর ভালো করে গোসল করে নিন। গ্রিন টি-র মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার খুশকি কমাতে সাহায্য করবে।

নিম পাতা

অন্য কোনো উপকরণ না পেলেও, শুধুমাত্র নিম পাতা দিয়েই খুশকি আটকানো সম্ভব। কারণ নিমের মধ্যে থাকা উপাদান খুশকি তৈরি করা ব্যাকটেরিয়া মারতে পারে। ফলে খুশকির পরিমাণ কমে। নিম পাতা রাতে চার-পাঁচ কাপ গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালবেলা সেখান থেকে তরলটি ছেঁকে বের করে নিন। তারপর মাথার তালুতে তরলটি মাখিয়ে রাখুন। একঘণ্টা এইভাবে মাখিয়ে রাখার পর মাথা ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। খুসকি কমে যাবে।

অ্যাসপিরিন

দুটো অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট গুঁড়ো করে প্রতিদিনের ব্যবহার করা শ্যাম্পুর সঙ্গে মিশিয়ে নিন। তারপর প্রতিদিন যেভাবে শ্যাম্পু করেন, সেভাবেই এই মিশ্রণ দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন। শুধু শ্যাম্পুটা মাখানো অবস্থায় মিনিট দুয়েক রেখে দিলে ভালো হয়। অ্যাসপিরিনের মধ্যে থাকা সালিসাইলেট মাথার ত্বকের উপকার করে এবং খুশকি আটকাতে সাহায্য করে।

(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :