করোনা আতঙ্কে বদলে গেছে ইতালি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:২৩
অ- অ+

করোনাভাইরাসের মারাত্মক প্রকোপ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে আন্তর্জাতিকভাবে নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পরও ইতালিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৪০০ জনে ঠেকেছে। গোটা ইউরোপে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইতালি। এই দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ইতালিতে সনাক্ত নতুন আক্রান্তের খবর ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায় যে প্রথমবারের মতো ভাইরাসটি চীনের বাইরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে এই ভাইরাসটি বিস্তার লাভ করেছিল। গত বছরের ডিসেম্বরের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী, প্রায় ৪০টি দেশের আশি হাজারেরও বেশি মানুষ নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংখ্যক চীনের বাসিন্দা। কোভিড-১৯, নামে এই ভাইরাসের ফলে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, এ পর্যন্ত ২,৭০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার দিনশেষে, ইতালি কর্তৃপক্ষ মোট ৪০০জন আক্রান্তের খবর প্রকাশ করে- মঙ্গলবার রাতের পর এই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ জনের মতো বৃদ্ধি পেলো। দেশটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে এর উত্তরের শিল্পাঞ্চল - মিলানের আশেপাশের এলাকা, লম্বার্ডি, এবং ভেনিসের কাছে ভেনেটো শহরে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে। এতে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১২জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

সরকারি কর্মকর্তারা জনসাধারণকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন এবং রোগের বিস্তার রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন। স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে এবং বেশ কয়েকটি পাবলিক ইভেন্ট বাতিল করা হয়েছে। প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এগারোটি শহরের - মোট ৫৫ হাজার বাসিন্দাকে আলাদা করে রাখা হয়েছে।

আশঙ্কা রয়েছে যে এই প্রাদুর্ভাবের ফলে ইতালি অর্থনৈতিক মন্দার মুখে পড়তে পারে। শহরের ক্যাফেগুলো জনশূন্য থাকায় এবং অনেক হোটেলের বুকিং বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইইউর স্বাস্থ্য কমিশনার স্টেলা কিরিয়াকাইডস, রোমে ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি উদ্বেগজনক একটি পরিস্থিতি, তবে আমাদের অবশ্যই আতঙ্কিত হয়ে হালা ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না। এই ভাইরাসটি সম্পর্কে এখনও অনেক বিষয় অজানা রয়ে গেছে। বিশেষত এর উৎস এবং এটি কীভাবে ছড়িয়েছে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি’।

করোনাআতঙ্কে ইতালির অনেক গির্জা প্রায় পুরোদিনই বন্ধ থাকছে৷ গ্রামের গির্জার পাদ্রী ডন নুনসিয়ো রসি জানালেন, গত কিছুদিন ধরে গির্জার দরজা সারাদিন প্রায় বন্ধই রাখতে হচ্ছে৷ বিশ্বাসীদের কথা ভেবে সকালে কিছুক্ষণের জন্য খুলতে হয়, বাকি সময় দরজা একেবারে বন্ধ৷

সম্প্রতি সোরিয়েসো গ্রামে এক বৃদ্ধা মারা গেছেন৷ এমনিতে কেউ মারা গেলে ৭০০ অধিবাসীর গ্রামের অনেকেই ছুটে আসেন৷ কিন্তু সেই বৃদ্ধাকে দাফন করতে এসেছিলেন মাত্র চার জন৷ চার জনের একজন গ্রামের গির্জার পাদ্রী৷ ইতালির ফুটবলও আতঙ্কের বাইরে নেই৷ সিরি ‘এ’ এর বেশ কিছু ম্যাচ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে, কিছু ম্যাচ হচ্ছে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে৷

গত দুই দিনে অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া, গ্রিস, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, জর্জিয়া এবং উত্তর ম্যাসেডোনিয়া তাদের প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতালিতে থাকা মানুষের সংস্পর্শে ছিলেন। স্পেন, ফ্রান্স এবং জার্মানিতে আরও কয়েকজন আক্রান্তের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা টাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মানিকগঞ্জে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার 
হামদর্দ বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভা অনুষ্ঠিত
পাবনা-ঢাকা সরাসরি এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর দাবিতে মানববন্ধন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা