যুদ্ধটা মানুষের, এখানে মানবিকতাই জয়ী হবে: সেব্রিনা ফ্লোরা

করোনা ভাইরাস এখন আর কোনো একটি দেশ জাতির সমস্যা নয়, এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা। ইতিমধ্যে ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতি ভাইরাসটি। সারাবিশ্বে আক্রান্ত হয়েছে ১৬ লাখেরও বেশি মানুষ, আর মুত্যৃ হয়েছে প্রায় ৯৭ হাজার। বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই অবস্থায় আমাদের করণীয় সম্পর্কে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। ঢাকা টাইমসের সঙ্গে তাঁর একান্ত আলাপে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা। মুঠোফোনে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সৈয়দ ঋয়াদ
প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, এই অবস্থায় আমাদের করণীয় কী?
করোনার ভয়াবহতা কতটা সেটা ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও ফ্রান্সের চিত্রটা দেখলে স্পষ্ট হবে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে সেটা গোটা বিশ্বকে চিন্তিত করছে। আমরাও এর বাইরে নই। করোনায় সরকারের চেয়ে বেশি কাজ করছে জনগণ। কিন্তু আমাদের মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না। আমি বলবো, নিজের জন্য হলেও ঘরে থাকুন।আমাদের দেশেও আক্রান্তের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে। এটিকে কীভাবে দেখছেন? কোভিড-১৯ ভাইরাসটি খুব দ্রুত সংক্রমিত হয়। হয়তো যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি বা ফ্রান্সের মতো অনেক বেশি নয়, তাই বলে আমরা হালকাভাবে নেবো না। ইতিমধ্যে সরকার বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চল লকডাউন করেছে। সরকারি বেসরকারি ছুটিও বাড়িয়েছে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত আমরা প্যানিক্ড হতে চাই না।
সাধারণ মানুষকে এখনও ঘরে ফেরানো যাচ্ছে না। এতে তো বড় ক্ষতির আশঙ্কা থাকে! যেসব দেশের জনগণ বিষয়টাকে গুরুত্ব দেয়নি, তাদের ভুগতে হচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী চাইছেন একজনও নতুন করে আক্রান্ত না হোক। কিন্তু আমরা যদি নিজেরা এই মহামারিকে হালকাভাবে নিই, সেটার ফলও ভাল হবে না। তবে আমি এটা মনে করি এই ভুল আমাদের দেশের মানুষ করবে না।
অভিযোগ উঠছে, সাধারণ ঠাণ্ডা-জ্বর-সর্দির চিকিৎসা পাচ্ছেন না মানুষ। এতটা কতটা ঠিক? এই অভিযোগটা পুরোপুরি সত্য নয়, সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত। আর চিকিৎসকরা তো তাদের বাইরের কেউ নন। তবে ইতিমধ্যে ৭০টিরও বেশি বেসরকারি হাসপাতাল ও বিশ হাজারে বেশি চিকিৎসাসেবী এই দুর্যোগে প্রতিশ্রুত হয়েছে, তারা করোনার চিকিৎসা দেবেন। আর এই যুদ্ধটা মানুষের। এখানে মানবিকতাই জিতবে।
আমাদের প্রস্তুতি কি যথাযথ আছে বলে মনে করেন? একটা অজ্ঞাত ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা খুব কঠিন। এটা যদি বলা মাত্র হয়ে যেত তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী দেশকে ভুগতে হতো না। আমাদের দেশে চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি নয়। তার ওপর পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলোর একটি। সে হিসেবে আমাদের প্রস্তুতি খুব খারাপ নয়।
ইউরোপ-আমেরিকা যেভাবে ধুকছে, সেই চিত্র দেখলে আমাদের শঙ্কা বেড়ে যায়... ইউরোপ-আমেরিকায় অর্থনৈতিক অবস্থা আমাদের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। চিকিৎসা ব্যবস্থাও উন্নত। সবই আছে তারপরও তারা পেরে উঠছে না। এটা নির্ভর করে কিভাবে সংক্রমণ রোধ করেছে। আমরা করোনার সংক্রমণ রোধ করতে চাই। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে পারলে এই যুদ্ধে জয়ী হওয়া কঠিন হবে না। আর এই যুদ্ধটা ব্যক্তির নিজের সঙ্গে নিজের যুদ্ধ।
তাহলে করোনার সঙ্গে যুদ্ধটা সবাইকে এককভাবে করতে হচ্ছে? হ্যাঁ। এই মুহূর্তে আমাদের একমাত্র করণীয় অন্তত নিজেকে নিরাপদে রাখা। নিজের মাধ্যমে অন্য কাউকে কিংবা অন্য কারো থেকে নিজে সংক্রমিত না হওয়া। বাকি কাজটা চিকিৎসকরা করবেন।
(ঢাকাটাইমস/ ১০ এপ্রিল/ এইচএফ)
সংবাদটি শেয়ার করুন
সাক্ষাৎকার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সাক্ষাৎকার এর সর্বশেষ

শক্তিশালী হয়েছে বলেই পুঁজিবাজারে আস্থা বেড়েছে

কাজের সুযোগ বেড়েছে, মান বাড়েনি: তানভীন সুইটি

‘পৃথিবীর প্রথম অ্যান্টিজ্যামার জিপিএস সিকিউরিটি লক তৈরি করেছে ট্যাসলক’

‘সংবাদ উপস্থাপনা একটা শিল্প’

পণ্য ও সেবার প্রতিযোগিতামূলক বাজার নিশ্চিতই প্রধান লক্ষ্য: মফিজুল ইসলাম

‘মেধাবীদের বিকশিত করতে না পারার দায় এড়ানো যাবে না’

‘অর্থনীতিতে অনেক অগ্রগতি আরও ভালোর সুযোগ আছে’

‘অনেক বিষয় সমাধান করতে পারায় জাতির আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে’

শেখ হাসিনা আজ অনুকরণীয় বিশ্বনেতা: নানক
