ফরিদপুরে প্রথম তিন রোগীর করোনা জয়

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল ২০২০, ১৫:১৭

ফরিদপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম তিনজন রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের ছাড়পত্র নিয়ে তারা নিজ নিজ বাড়ি ফিরেন। এসময় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা তাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বিদায় জানান। এসময় আক্রান্তদের গ্রামগুলো থেকে লকডাউনও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরা এই তিনজন হলেন- নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ডাঙ্গি গ্রামের আব্দুল খলিলুর রহমান বেপারী (৬২), তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার বুলু (৪৮) ও বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চন্দনী গ্রামের শাহাবুদ্দিন (৪৭)।

এদের মধ্যে খলিলুর রহমান গত ১৩ এপ্রিল করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত হন। তার সপ্তাহখানেক আগে তিনি নারায়ণগঞ্জ হতে ফিরেন। ঢাকার আইসিসিআরে তার নমুনা পাঠানোর পর করোনা পজিটিভ আসে। তার সাথে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন ঢাকাফেরত আরো একজন। তাদের ফরিদপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর নগরকান্দা উপজেলা লকডাউন করা হয়।

এর চারদিন পর শুক্রবার করোনাভাইরাস পরীক্ষার পর পজিটিভ আসে খলিলুর রহমানের স্ত্রী জেসমিন আক্তারের। ওইদিনই বোয়ালমারীর শাহাবুদ্দিনের করোনা পরীক্ষার তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাদেরও ফমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই বোয়ালমারীর চন্দনা গ্রামটি লকডাউন করে স্থানীয় প্রশাসন।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান বুলু জানান, দু’দফায় তাদের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর আমরা তাদের সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এরপরই তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়।

গত দুই সপ্তাহ যাবত করোনাভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করার পর হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার সময় ডাক্তার ও নার্সদের ফুলের অভিনন্দন পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন রোগীরা।

এদের একজন খলিলুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আসার পর থেকে অনেক ভয়ে ছিলাম। আমার পরে যখন বাড়ির আরেকজনও করোনা আক্রান্ত হলো তখন ভয় আরো বেড়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, শরীরে যখন জ্বর বেড়ে যেত- তখন খুব কষ্ট পেতাম। তবে আল্লাহর রহমতে খারাপ কিছু হয়নি।

খলিলুর রহমানের স্ত্রী জেসমিন আক্তার বলেন, হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সেরা কখনো আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি। এটাই আমাদের বড় ভরসা ছিল। তারাও আমাদের সেবা করতে গিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। সময় মতো খাবার খেতে পারেননি। বাড়িতে যেতে পারেননি। আল্লাহ তাদের মঙ্গল করুন।

ডা. মাহফুজুর রহমান বুলু ছাড়াও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা ডা. আসাদুল হক সুমন, ডা. কামরুজ্জামান, সিনিয়র স্টাফ নার্স আফসানা আক্তার, কাকলি খাতুন, মর্জিনা খাতুন, লাভলী আক্তার, রেহেনা ও ফারজানা সুস্থ হয়ে পড়া তিনজন রোগীকে তাদের বিদায় মুহূর্তে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ফমেকের ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরার এই খবরে সংশ্লিষ্টদের মাঝেও স্বস্তি ফিরে আসে। এ ঘটনাকে তাদের জন্য বড় কেস স্টাডি হিসেবে উল্লেখ করেন তারা।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান জানান, বর্তমানে সেখানে দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। আর করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৫ জন।

(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :