মুঠোফোনে হুইপকে জানাতেই সহায়তা পেল প্রতিবন্ধী পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর
  প্রকাশিত : ০৯ মে ২০২০, ২৩:২৫
অ- অ+

অনাহারে থাকার কষ্টের কথা মুঠোফোনে হুইপ ইকবালুর রহিমকে বলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ত্রাণ সহায়তা পেল এক প্রতিবন্ধী পরিবার। দিনাজপুর সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জামালপুর শাহাপাড়ায় সরেজমিনে দেখা গেল, পরিবারের ৫ সদস্যের মধ্যে ৩ জনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। চরম সংকটে থাকা অসহায় পরিবারের জোটেনি কিঞ্চিত পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা। ক্ষুধার যন্ত্রণা যখন আর সহ্য করা যাচ্ছিল না, তখন প্রতিবন্ধী রোজিনা আকতার কাতর কণ্ঠে মুঠোফোনে তাদের পরিবারের কষ্টের কথা জানালেন স্থানীয় সংসদ সদস্যকে। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে গেল ওই প্রতিবন্ধী পরিবারের কাছে।

স্বল্প আয়ের রেজাউল ইসলাম ও আহেদা আকতারের পরিবারের ৫ সদস্যর মধ্যে ৩ জনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। ছেলে জুয়েল (৩৪), মেয়ে রোজিনা আকতার (২৫) এবং ছোট ছেলে রোহান (১৪)। তিন সন্তানই তাদের জন্মসূত্রে প্রতিবন্ধী। ছোট ছেলে রোহান সারাক্ষণই শুয়ে থাকে, বসতেও পারে না। তাদের বাবা রেজাউল ইসলাম ছোট দোকান কর্মচারী। বেশ কিছুদিন আগে দুর্ঘটনায় তারও পা ভেঙে গিয়ে পঙ্গু প্রায় অবস্থা। পিতার যৎসামান্য রোজগার আর দুই ভাইবোনের প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে টানপোড়নে চলছিল তাদের সংসার। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের ছোবলে বাবা রেজাউল ইসলামের সামান্য রোজগারের পথও বন্ধ হয়ে যায়। চরম সংকটে পড়ে অসহায় এই পরিবারের সদস্যরা।

প্রতিবন্ধী রোজিনা আকতার জানান, জেলায় লকডাউনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কোন ধরনের ত্রাণ সহায়তা পায়নি তারা। অনাহারে-অর্ধাহারে কোনমতে দিন কাটছিল তাদের।

‘প্রাণঘাতি করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ঘরে থাকা স্বল্প আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দেয়া হবে, কোন মানুষ অনাহারে থাকবে না’- টেলিভিশনে প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য শুনে রোজিনা বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পায়। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য শুনেই তার মনে আশার আলো জাগে এবং সেই আশা নিয়েই ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতরকণ্ঠে প্রতিবন্ধী রোজিনা আকতার মুঠোফোনে এলাকার সংসদ সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিমকে ফোন করেন। তাদের অসহনীয় কষ্টের কথা ধৈর্য্যের সাথে শোনেন তিনি। ফোনে কথা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে হুইপ ইকবালুর রহিম চাল, ডাল, লবণ, তেল, সেমাই, চিনি, পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন কাপড়, স্যানিটাইজার, মাস্কসহ ১৭ ধরনের ত্রাণ সহায়তা অসহায় পরিবারটির কাছে পৌঁছে দেন। যা ৫ সদস্যের পরিবারের ১৫ দিন চলবে। ত্রাণ সহায়তা পেয়ে ওই পরিবারের সদস্যরা আবেগে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন।

হুইপ ইকবালুর রহিমের পাঠানো এসব ত্রাণ সহায়তা অসহায় পরিবারের হাতে পৌঁছে দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী।

এই প্রথম খাদ্যসামগ্রী ও নতুন কাপড় পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিন শারীরিক প্রতিবন্ধীর মা আহেদা আকতার বলেন, এ দুঃসময়ে আমাদের খোঁজ কেউ রাখে না। অতি কষ্টে দিনযাপন করছি। সংসার চালাতে এভাবে সকলের সহযোগিতা পেলে সন্তানদের মুখে আহার তুলে দিতে পারব।

তিনি জানান, হুইপ ইকবালুর রহিম দু’বছর আগে দুটি হুইল চেয়ার দিয়েছেন।

প্রতিবন্ধী জুয়েল জানান, করোনায় ভয়াল থাবায় আমরা তিন ভাইবোন বাড়ি থেকে বের হই না। অসুস্থ বাবার কোন আয়-রোজগার না থাকায় দিশেহারা আমরা। বাড়িতে খাবার না থাকায় শেষে বাধ্য হয়েই প্রতিবন্ধী বোন রোজিনা মুঠোফোনে বিষয়টি জানান স্থানীয় এমপি ইকবালুর রহিমকে। তিনি কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ত্রাণ সহায়তা বাড়িতে পৌঁছে দেন।

সদর উপজেলার ৮ নং শংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী জানান, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি আমাকে ফোন করে তিন প্রতিবন্ধী ভাইবোনকে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেয়ার কথা বলেন।

(ঢাকাটাইমস/৯মে/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সং‌র‌ক্ষিত নারী আসনের সাবেক এম‌পি লায়লা পারভীন‌ গ্রেপ্তার 
সৌদি আরবে আরও এক হজযাত্রীর মৃত্যু
বেনাপোল সীমান্ত থেকে ২ কোটি  টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ
নারী নির্যাতনের মামলায় কণ্ঠশিল্পী নোবেল গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা