নিরাপত্তা আইন জোরদারের পর হংকং ছাড়ার হিড়িক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০২০, ১২:২৩
অ- অ+

মাইকেল ও সেরেনা কখনো কখনো যুক্তরাজ্যে যাননি, কিন্তু তারাই এখন হংকং ছেড়ে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই দম্পতির ব্রিটিশ ন্যাশনাল (ওভারসিজ) বা বিএনও -পাসপোর্ট আছে যেটি তারা পেয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন চীনের কাছে হংকং হস্তান্তরের আগে।

এটি একটি ট্রাভেল ডকুমেন্টস যার বিপরীতে বেশ কিছু কনস্যুলার সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে। মাইকেল ও সেরেনা ব্যাংকে মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপক এবং তাদের তের বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান আছে। অনেক বছর আগে তারা একটি ফ্লাটও কিনেছিলেন। এ ধরনের অনেক কিছুই তাদের ফেলে যেতে হবে।

তারা বলছেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনের সময় যেভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা হয়েছে এই হংকং তাদের কাছে অচেনা। তারা দেখেছেন যে সরকার জনগণের কথা শুনতে চায়নি এবং পুলিশের মধ্যে ধৈর্য ছিল কমই।

চীনা একটি ব্যাংকে কাজ করেন বলে তাদের পরিবার এই আন্দোলনে সরাসরি অংশ নেয়নি, তাও তাদের কন্যা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ব্যাংকের একজন কর্মীকে আন্দোলনে অংশ নেয়ার দায়ে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সেরেনা বলছেন, তাদের মেয়ে বিদেশে পড়ালেখা করতে চায়। সে খুবই ক্ষুব্ধ ও হতাশ। তার প্রশ্ন কেন কর্তৃপক্ষ তাদের এভাবে দেখে।

নিরাপত্তা আইন গত সপ্তাহ থেকেই কার্যকর হয়েছে। সেরেনা বলছেন যে, চীন যে দাবি করছে যে আইনটি অল্প কিছু লোকই এই আইনটির টার্গেট হবে তা তিনি খুব একটা বিশ্বাস করেন না।

যুক্তরাজ্য এখন বিএনও পাসপোর্টধারীদের ছয় বছর অবস্থান করার শর্তে নাগরিকত্বের সুবিধা দিতে চাইছে। যুক্তরাজ্য মনে করে এই নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে চীন-ব্রিটেন চুক্তির লঙ্ঘন হয়েছে এবং হংকংয়ে স্বায়ত্তশাসন ও হংকং অধিবাসীদের নাগরিকদের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে।

মাইকেল ও সেরেনার মূল লক্ষ্য ছিল শুধু মেয়েকে বিদেশে পড়তে পাঠাবে, কিন্তু এখন পুরো পরিবারই যুক্তরাজ্য চলে যাওয়াটাই তাদের প্রথম পছন্দ। গত নভেম্বরে তারা তাদের মেয়াদোত্তীর্ণ বিএনও পাসপোর্ট নবায়ন করেছেন।

মাইকেল বলেন, 'আমি ভেবেছি শেষ পর্যায়ে হয়তো যুক্তরাজ্য বিএনও পাসপোর্টধারীদের নাগরিকত্বের অফার দেবে। কিন্তু সেটি এতো তাড়াতাড়ি আসবে তা ভাবিনি'।

তবে হংকংয়ে নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ শুরুর পর মাইকেল ও সেরেনার এ গল্প এখন অনেকটাই সাধারণ চিত্রে পরিণত হয়েছে। এ মূহুর্তে হংকংয়ে প্রায় সাড়ে তিন লাখ বিএনও পাসপোর্টধারী ব্যক্তি আছেন এবং যুক্তরাজ্য সরকারের ধারণা মোট বিএনও আছে প্রায় প্রায় ২৯ লাখ।

১৯৯৭ সালের পর জন্ম নেয়া কোনো হংকং নাগরিক বিএনও পাসপোর্ট পেতে পারেন না। আবার হংকং চীনের কাছে হস্তান্তরের আগে যারা আবেদন করেননি তারাও এটি পাবে না। ৭৫ লাখ লোকের হংকং শহরে অন্তত আট লাখ মানুষের ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট আছে।

তবে বিএনও পাসপোর্টধারীদের নাগরিকত্ব দেয়ার যে পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রিটেনে তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন। তারা এটিকে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ মনে করছে। সূত্র: বিবিসি

ঢাকা টাইমস/১৩জুলাই/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগে আসছে নতুন পরিকল্পনা
পৃথিবীর সর্বোচ্চ দামে পৌঁছাল বিটকয়েন, মূল্য ছাড়ালো ১ লাখ ২০ হাজার ডলার
বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান লায়ন বাশার গ্রেপ্তার
২০ জুলাই থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান: বিআরটিএ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা