সারি সারি খাটিয়া, অশ্রু-কান্নায় প্রিয়জনদের বিদায়

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশি প্রক্রিয়া শেষে এখন তাদের দাফনের প্রস্তুতি চলছে। নিহত ও আহতরা সবাই তল্লা চামারবাড়ি বায়তুস সালাত জামে মসজিদের আশেপাশের বাসিন্দা। স্বজনদের আহাজারিতে পুরো তল্লা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

শনিবার বিকালে যখন নিহতদের মরদেহগুলো একে একে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। মরদেহগুলো রাখা হয় মাঠে। এরই মধ্যে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে এক শিশুর জানাজা শেষ হয়। পরে শিশুটিকে দাফনের জন্য নিয়ে যান শোকার্ত স্বজনরা।

এর আগে বিকালে একে একে নিহতদের মরদেহ ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় নিয়ে আসা হয়। ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বোমওয়ালার বাড়ির খেলার মাঠে নিহতদের জানাজার জন্য প্রস্তুত রাখা হয় অনেকগুলো খাটিয়া।

নিহতদের মরদেহ গ্রহণ করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক। জানাজা শেষে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবেন ইউএনও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণে আহত ও নিহতের মধ্যে বেশিরভাগই পরিবারের উপাজনক্ষম ব্যক্তি-গার্মেন্ট কর্মী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অনেক পরিবার বাকরুদ্ধ। একসঙ্গে এতগুলো মানুষ মারা যাওয়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাদের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। একই সঙ্গে শনিবার এলাকার সব দেকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে নিহতদের পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. জসিম উদ্দিন।

শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা প্রায় ৫০ জনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন তারা। তাদের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/০৫সেপ্টেম্বর/ইএস