গৃহবধূ হত্যার দুই বছর পর রহস্য উদঘাটন

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৫০ | প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৩৬

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার মার্জিয়া কান্তা (২৫) নামে এক গৃহবধূকে স্বামী ও তার সহযোগী কর্তৃক হত্যা করে লাশ গুম করার দুই বছর পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদী। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলের দুই মালিকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যার পর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ফেলে দেয়া লাশের সন্ধান করতে না পারলেও উদ্ধার হয়েছে নিহতের ব্যবহৃত লাগেজ, কাপড়, জুতাসহ অন্যান্য আলামত।

মার্জিয়া কান্তা নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বীরবাঘবেড় গ্রামের সোহরাব হোসেন রতনের মেয়ে। কান্তা সাভারের আশুলিয়ায় কান্তা বিউটিপার্লার নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন- নিহতের স্বামী কুড়িগ্রামের রৌমারি এলাকার শহিদুল ইসলাম সাগর (৩৭), সাগরের সহযোগী রৌমারি থানার রতনপুরের শাহিনুর ইসলামের ছেলে মামুন মিয়া (২৬), পটুয়াখালীর কুয়াকাটার হোটেল আল মদিনার মালিক দেলোয়ার হোসেন (৪৪), তার ভাই আনোয়ার হোসেন (৩৭) এবং হোটেল ম্যানেজার আমির হোসেন (৩৮)।

শনিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, পরিচয়ের সূত্রধরে পার্লার ব্যবসায়ী মার্জিয়া কান্তার সাথে বিয়ে হয় কুড়িগ্রামের শহিদুল ইসলাম সাগরের। বিয়ের পর সাগরের আরো একাধিক স্ত্রী রয়েছে জানতে পারে কান্তা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়।

২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে গৃহবধূ মার্জিয়াকে নিয়ে ভারত ভ্রমণের উদ্দেশ্যে নরসিংদীর বেলাব উপজেলা থেকে সাভারের আশুলিয়ার বাসায় যান স্বামী সাগর। সেখান থেকে প্রস্তুতি নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে তারা শরিয়তপুর যান। সেখানে সহযোগী মামুনকে নিয়ে নদী ভাঙন দেখানোর কথা বলে স্ত্রী কান্তাকে হত্যার পরিকল্পনায় ব্যর্থ হন। পরে শরীয়তপুর থেকে কান্তাকে নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত দেখানোর জন্য সেখানকার আল মদিনা নামের একটি আবাসিক হোটেলে পরিচয় গোপন করে উঠেন তারা। ওই হোটেল কক্ষেই স্বামী ও তার সহযোগী মামুন গৃহবধূকে গলাটিপে হত্যা করে খাটের তলায় লাশ লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যান।

পরবর্তীতে হোটেল কক্ষ থেকে লাশ সন্ধান করতে না পারলেও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের লাগেজ, কাপড়, একটি চাপাতিসহ কিছু আলামত উদ্ধার করে বিষয়টি সাধারণ ডায়েরি করে রাখে স্থানীয় পুলিশ।

এদিকে কান্তা নিখোঁজের ঘটনায় বেলাব থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। পরে পিবিআই তদন্তে নামলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার স্বামী ও সহযোগীকে গ্রেপ্তার ও তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর হত্যার তথ্য। গ্রেপ্তার আসামিরা জানায়, হত্যা করে লাশ কুয়াকাটার আল মদিনা হোটেলের খাটের নিচে গুম করে পলাতক থাকে। পরে হোটেলে দুর্গন্ধ পেয়ে হোটেল বয়ের মাধ্যমে খাটের নিচে অজ্ঞাত লাশ দেখতে পায় কুয়াকাটার হোটেল আল মদিনা মালিক দুই ভাই। পরে ব্যবসার সুনাম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা ও পুলিশি হয়রানি এড়াতে হোটেল কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি বের করে কুয়াকাটা সমুদ্রে ফেলে দেয়। পুলিশ নিহতের পরনের কাপড়সহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করলেও সমুদ্রে নিক্ষেপ করায় লাশ উদ্ধার করতে পারেনি। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

(ঢাকাটাইমস/৫সেপ্টেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :