পত্রিকায় ‘হারানো বিজ্ঞপ্তি’ খুঁজে পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার ফাঁদ

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
  প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর ২০২০, ২০:৩৫
অ- অ+

প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় চোখ রাখতেন ফারুক হোসেন ফিটু। পত্রিকায় নিখোঁজদের সন্ধানে কিংবা কোনো কোনো কিছু হারিয়ে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি খুঁজতেন। বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়লেই ঠিকানা ও জিডির নম্বর সংগ্রহ করে নিজেকে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিচয় দিতেন। এরপর চলত নিখোঁজদের সন্ধান চাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ সংগ্রহ। সব টাকা তিনি নিতেন বিকাশের মাধ্যমে।

গত চার বছর ধরে এভাবে শত শত মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ সংগ্রহ করতেন ফারুক হোসেন ফিটু। এই জন্য তিনি ব্যবহার করতেন ১৬টি মোবাইল ও ২৪টি সিম। সব সিম ও বিকাশ নম্বর রেজিস্ট্রেশনে তিনি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করতেন। প্রতারণা দায়ে মঙ্গলবার তাকে পাবনার আমিনপুর থানার চক আব্দুল শুকুর এলাকা থেকে পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

ফারুক হোসেনের বাড়ি চক আব্দুল শুকুর গ্রামে। তার বাবার নাম নাদের শেখ। তিনি পাবনা কাজির হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এরপর ২০০১ সালে ঢাকায় গিয়ে টপিক্যাল সিকিউরিটি হোম’স লিমিটেড নামক সিকিউরিটি কোম্পানিতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চাকরি করেন। এরপর তিন বছর পাবনায় থেকে ২০১২ সালে আবার ঢাকায় যান তিনি। ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে চা বিক্রি করেন। কিন্তু ২০১৭ সালের পর থেকে তিনি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতেন।

গত মাসের ২৯ তারিখে রাজপাড়া থানার একজন এসআই আরএমপি সদর দপ্তরে অভিযোগ করেন যে, রাজপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদ আলমের পরিচয় দিয়ে চারটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে নগরীর ডাবতলা এলাকার তিনজন ব্যক্তিকে ফোন করেন। ফোন করে পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি তদন্ত, উদ্ধার ও উদ্ধারকৃত ডকুমেন্ট পাঠানোর জন্য টাকা দাবি করে।

পরে তারা থানায় অভিযোগ করলে দেখা যায় রাজপাড়া থানার এসআই মাসুদ ও থানার কেউ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। তখন রাজপাড়া থানা পুলিশ মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে নম্বরগুলো প্রেরণ করে। নম্বরগুলোর পাওয়ার পর ২১ দিন বিশ্লেষণ করে সাইবার ক্রাইম ইউনিট মিথ্যা পরিচয়দানকারী ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে। এরপর তাকে পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস, সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রধান উৎপল কুমার চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার বলেন, ফারুক হোসেন গত কয়েক বছর ধরে পুলিশের ওসি, এসআই পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছেন। প্রতিমাসে কমপক্ষে ২০ জনের কাছ থেকে সারাদেশে এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আরো তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

(ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হজমশক্তি বাড়ানোর স্বাস্থ্যকর উপায়
দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির
‘তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক ইতিবাচক বার্তা হতে পারে’
আজ থেকে সচিবালয় ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা