শেকলে বাঁধা নির্যাতিতার মামলা, স্বামী গ্রেপ্তার

ঢাকার ধামরাইয়ে গাছে বেঁধে ও পায়ে শেকল পরিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে গৃহবধূর করা মামলায় তার স্বামী নুরুল করিম কাঞ্চনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী গৃহবধূ চারজনের নাম উল্লেখ করে ধামরাই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- গৃহবধূর দেবর রফিকুল ইসলাম অলিদ, স্বামী কাঞ্চনের প্রথম স্ত্রীর ছেলে হৃদয় চৌধুরী ও জা শাহনাজ চৌধুরী।
গ্রেপ্তার নুরুল করিম কাঞ্চন সূতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামের মৃত রহিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি মানিকগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অফিসের টেকনিশিয়ান পদে চাকরি করেন।
এজাহারে বলা হয়, গ্রেপ্তার রফিকুল ইসলাম কাঞ্চন আগে আরো দুটি বিয়ে করেন এবং দুই স্ত্রীই মারা যান। প্রথম স্ত্রীর ঘরে হৃদয় নামে এক সন্তান আছে। এরপর নয় বছর আগে হাতকোড়া গ্রামের ভুক্তভোগীকে (মামলার বাদী) পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন কাঞ্চন। বিয়ের পর তিনি একটি ছেলে সন্তানের মা হন।
কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী কাঞ্চন ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের জন্য কাঞ্চনের স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকে। পাঁচ লাখ টাকা দাবিকৃত যৌতুক না দেয়ায় তাকে শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী তার বাবার বাড়ি থেকে নগদ তিন লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার এনেও দিয়েছিলেন স্বামীকে। তারপরও আরো দুই লাখ টাকার জন্য তাকে প্রচণ্ড চাপ দেয়া হচ্ছিল।
এরই জেরে গত বুধবার স্ত্রীকে গাছে বেঁধে ও পায়ে শেকল পরিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে বাঁচায় এবং ভুক্তভোগীর বাবা-মা ও স্বজনদের খবর দিলে তারা এসে তাকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর মা জানান, অনেক আগে থেকেই তার মেয়েকে যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করতেন স্বামী কাঞ্চন ও তার পরিবারের সদস্যরা। এছাড়াও কাঞ্চনের একাধিক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। যা তার মেয়ে বুঝতে পারায় তার উপর নির্যাতন করা হতো।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা প্রতিবেদককে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী গৃহবধূ নিজেই মামলা করেন। মামলায় বাদীর স্বামীসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বেলীশ্বর এলাকা থেকে তার স্বামী কাঞ্চনকে গ্রেপ্তার করেছেন তারা। শুক্রবার দুপুরে আসামিকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতে পাঠানোর কথা। মামলার বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
(ঢাকাটাইমস/৬নভেম্বর/কেএম)

মন্তব্য করুন