খাদ্যে ভেজাল বন্ধ না হলে সামনে ভয়াবহ দিন

নিরাপদ খাদ্য সংকট দূরীকরণ মানবাধিকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। বিশ্বে ৬০ কোটি মানুষ ভেজাল ও দূষিত খাবারের কারণে প্রতিবছর অসুস্থ হয়। বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত ভেজাল খাবার খেয়ে ৪৫ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। তাই এখনই খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বে।
প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস-২০২০ উপলক্ষে নিরাপদ খাদ্য অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার আন্দোলন বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, ভেজাল খাদ্যের কারণে শুধুমাত্র অসংক্রমিত রোগে প্রতিবছর লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারায়। এমন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশেও নিরাপদ খাদ্যের সংকট দূরীকরণই এখন মানবাধিকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারেনি। এ খাতে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ এখনই বন্ধ না হলে অচিরেই তা চীনের কোরোনা ভাইরাসের মতো মহামারি আকার ধারণ করবে।
তিনি বলেন, দেশের প্রায় সব ভোগ্যপণ্যের মধ্যে ভেজাল ঢুকে গেছে। অধিক লাভের আশায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও উৎপাদকরা খাদ্যে ভেজাল মেশাচ্ছে। শক্ত হাতে এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব না হওয়ায় তা এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে ছোট বড় সব খাবার দোকানে ভেজাল খাবার। কিন্তু সে তুলনায় আইনের বাস্তবায়ন খুবই নগণ্য।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে। তাহলেই কেবল সম্ভব হবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য দেশের মানুষের অন্যতম আকাঙ্ক্ষার বিষয়। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে আইনের প্রয়োগসহ তথ্য-উপাত্তের জন্য দেশে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষাগার স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপদ খাদ্যের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের প্রধান নির্বাহী কামরুজ্জামান বাবলু বলেন, প্রতিদিন খাবার গ্রহণের সময় নানা প্রশ্নে জর্জরিত হচ্ছি আমরা। যা খাচ্ছি তা বিষ নয় তো? ফলমূলে কেমিকেল, মাছে ফরমালিন, মাংসে ক্ষতিকর হরমোন, শাকসবজিতে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ এ ধরনের অনেক সংশয় ও আতঙ্কের মধ্যেই আমরা বেঁচে আছি।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আজমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ মহাসচিব মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মো. শহীদুল ইসলাম, সামসুল আরেফীন, নোমান মোশারেফ, আব্দুল আজিজ, আলো খাতুন প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/০৯ডিসেম্বর/বিইউ/কেআর)

মন্তব্য করুন