জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন ঘোষণা

আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তিসহ তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাস শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর কাকরাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এই ঘোষণা দেন তিনি।
আজ দ্বিতীয় দিনের মতো কাকরাইলে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। গত রাতেও কাকরাইলের রাস্তায় অবস্থান করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এখানে সড়কেই ঘুমান তারা।
অধ্যাপক রইস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদয়ের দাবি আদায়ের জন্য এসেছি। আমরা কারও বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি, কোনো ষড়যন্ত্র করতে আসেনি। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না।’
দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন চলবে ঘোষণা করে ড. রইসউদ্দিন বলেন, ‘এই সময়ে কোনো শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে না। দাবি আদায় করে আমরা ঘরে ফিরব।’
জবি শিক্ষক সিমিতির সভাপতি হুঁশিয়ার করেন, ‘আমাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে ভালো হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়’ ‘বাজেট কাটছাঁট চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
তিন দফা দাবি আদায়ে গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লং মার্চে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গুলিস্তান, মৎস্য ভবন পার হয়ে বেলা সাড়ে ১২টায় লংমার্চ কাকরাইল মসজিদের সামনে এলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় লংমার্চ।
পরে তারা কাকরাইল মোড়ে জড়ো হন এবং সেখানে অবস্থান নেন। রাতে সেখানে যান তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান ।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুতই প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির বিষয়ে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।
যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনের বিষয়ে সরকার কথা শুনবে জানিয়ে তিনি একই সঙ্গে হুঁশিয়ার করেন, কিছু হলেই যমুনায় চল, এমন আর হবে না। সরকার কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে।
এরই মধ্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। কে কারা উপদেষ্টার জটলার দিকে একটি পানির বোতল ছুড়ে মারে। এটি তার মাথায় আঘাত করে।
এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন।
তাদের দাবিগুলো হলো আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা।
(ঢোকাটাইমস/১৫মে/এমজেড)

মন্তব্য করুন