ওজন কমাতে রাতে মেনে চলুন তিন ডায়েট

আধুনিক জীবনযাপন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। অসময়ে খাওয়া। ঘুম কম। বাড়ির রান্না করা খাবারের বদলে জাঙ্কফুডে উদরপূর্তি। আর ব্রেকফাস্ট বাদ মানেই তো শরীর বরবাদ। এসব চিকিত্সকরাই বলেন। কিন্তু আমরা শুনছি কতটুকু। আমাদের জীবন হচ্ছে লাগামছাড়া। ভেজাল খাবারের রমরমা। তার সঙ্গে দূষণের করাল থাবা। ওয়ার্কআউটের বালাই নেই। ওবেসিটি মারাত্মক চেহারা নিচ্ছে। শরীরে মেদ জাঁকিয়ে বসা মানেই একাধিক মারণ রোগের হাতছানি। যেন তেন প্রকারেণ ওজন কমাতেই হবে। খাওয়া দাওয়ায় শক্ত লাগাম, তবুও মিলছে না সুফল। রোজ বাড়ছে শরীরের ওজন।
ওজন কমানোর জন্য বেশিরভাগ মানুষ চিন্তিত থাকেন। কী করলে, কী কী না খেলে ওজন কমবে, কোন কোন খাবার ওজন কমায়, ডায়েট করতে চাইলে কীভাবে করতে হবে- নানা ভাবনাচিন্তা করেন একাংশ। সেই মোতাবেক গুগলে চলে সার্চের পালা।
অনেকেই আছেন যারা ওজন কমানোর জন্য রাতের খাবার খান না। কিন্তু আপনি জানেন কি, ওজন কমানোর জন্য রাতের বেলা খাবারের গুরুত্ব কতটা বেশি? দীর্ঘ ৮-১০ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে, তাই বলে রাতের বেলা খাওয়া বাদ দিয়ে ডায়েট করা মোটেও ভালো কোনো বুদ্ধি নয়। রাতের বেলা খাবার না খেয়ে থাকলে লাভের থেকে ক্ষতির পরিমাণই বেশি। ওজন তো কমবেই না বরং স্বাস্থ্যহানি ঘটবে। তাই আজকে আপনাদের জন্য রইল চটজলদি ওজন কমাতে সহায়ক রাতের বেলার ৩ টি ডায়েট প্ল্যান। রাতে বেলা না খেয়ে থাকার চেয়ে এই ডায়েট চার্ট অনুসরণ করুন। দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন।
ডায়েট প্ল্যান-১: যারা ভাত জাতীয় খাবার পছন্দ করেন
অনেকেই আছেন যারা ভাবেন ভাত খেয়ে ওজন কমানো যায় না। কথাটি সম্পূর্ণ ভুল। পরিমিত পরিমাণ ভাত ওজন কমাতে বেশ সহায়ক। নিয়ম করে রাতের বেলা এই চার্ট-টি অনুসরণ করেই দেখুন ওজন কমে কিনা!
১ কাপ ভাত: ভাতের পরিমাণ ১ কাপই হতে হবে। কোনো ভাবেই এর চাইতে বেশি নয়।
১ টুকরো মাছ/ মাংস: মাঝারি আকৃতির এক টুকরো মাছ/মাংস শরীরের আমিষের চাহিদা পূরণ করবে।
১ কাপ সবজি: কম তেলে বা তেলবিহীন সবজিভাজি ফ্যাট অনেকাংশে কমায়। ১ কাপ পরিমাণ সবজি অবশ্যই ডায়েট চার্ট-এ রাখবেন। সবচাইতে ভালো হয় কাঁচা সবজির সালাদ রাখলে।
১ কাপ ডাল: ডাল ফ্যাট কাটতে সহায়তা করে। পাশাপাশি পুষ্টি যোগায় শরীরে।
দই: ১ কাপ টক দই। এটা খাবার হজমে সাহায্য করবে।
ডায়েট প্ল্যান-২: যারা রুটি জাতীয় খাবার পছন্দ করেন
অনেকে রাতে ভাত খেতে পারেন না বা খেতে চান না। তাদের জন্য এই ডায়েট চার্ট। অনুসরণ করে দেখুন, ওজন কমবে দ্রুত।
২ টি পাতলা আটার রুটি: রুটিটি অবশ্যই আটার হতে হবে। লাল আটা হলে ভালো হয়। ময়দা ও পাউরুটি হলে চলবে না। কারণ ময়দার রুটি ও পাউরুটি খেলে ওজন বাড়ে।
১/২ কাপ সবজি: কম তেলে বা তেলবিহীন সবজিভাজি আটার রুটির সাথে খেতে পারেন।
১/২ টি ডিমের সাদা অংশ: ডিম প্রোটিনের খুব ভালো একটি উৎস। ডিমের সাদা অংশে ক্যালোরি অনেক কম থাকে। তাই ১/২ টি ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। কিংবা এক টুকরো মাছ বা মাংস যা আপনার পছন্দ।
১/২ টি ফল: নাসপাতি, আপেল কিংবা পেপে এই তিনটি ফলের যে কোন ১ টি খাবেন। দই খেতে চাইলে ২/৩ টেবিল চামচ খেতে পারেন।
ডায়েট প্ল্যান-৩: সবচাইতে দ্রুত ওজন কমানোর জন্য
এই ডায়েট প্ল্যানটি যে কেউ অনুসরণ করতে পারেন খুব দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে। দ্রুত ওজন কমাতে খুবই কার্যকরী একটি চার্ট।
আধা কাপ হাই ফাইবার কর্ণফ্লেক্স: হাই ফাইবার কর্ণফ্লেক্স ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে কর্ণফ্লেক্স অবশ্যই চিনি ছাড়া হতে হবে। যদি চিনি ছাড়া খেতে না পারেন তবে মধু ব্যবহার করতে পারেন।
১ কাপ মাখন ছাড়া দুধ: মাখন ছাড়া দুধে ক্যালোরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। তাই ডায়েট চার্ট-এ ১ কাপ মাখন ছাড়া দুধ অবশ্যই রাখবেন।
ফল: এই ডায়েট চার্টে ফলের গুরুত্ব অনেক বেশী। বেশী করে পাকা পেপে খাবেন রাতে। এরা ফ্যাট কমাতে অনেক সহায়তা করে।
কর্ণফ্লেক্স ও দুধ একসাথে মিশিয়ে খেয়ে নিন। দুধটা ঠাণ্ডা না খেয়ে গরম খাবেন। সাথে খেতে পারেন এক মুঠো কাঠ বাদাম।
নিজেকে সুস্থ রেখে ওজন কমান। কারণ যত যাই করুন না কেন, মনে রাখবেন দিন শেষে সুস্থতাই আপনাকে সুন্দর জীবন উপহার দেবে। আপনি যদি দেখেন মোটা হয়ে যাচ্ছেন তাহলে ডায়াবেটিস আর কোলেস্টেরলের পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। সেই সঙ্গে যদি নিয়ম করে অল্পবিস্তর হাঁটাহাঁটি বা আধা ঘন্টা জগিং করা যায় তাহলে শরীর ও মন ভালো থাকবে।
(ঢাকাটাইমস/১৫ ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)

মন্তব্য করুন