ধুলোবালি-যানজটে সুনামগঞ্জ পৌরবাসীর দুর্ভোগ

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:২৯

দিন দিন সুনামগঞ্জ পৌরসভা ধুলোবালি ও যানজটের শহরে পরিণত হচ্ছে। ১০ মিনিটের পথ যেতে এক ঘণ্টার বেশি সময় নষ্ট হচ্ছে মানুষের। সড়কগুলোর সংস্কার কাজে সমন্বয়হীনতা, ধীরগতি এবং অপরিকল্পিত কাজের কারণে অনুমোদনহীন যানবাহনের চাপ ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর শহরের অনেক সড়কের দুই পাশের জায়গা বিদ্যুতের খুঁটি দখল করে রেখেছে। এছাড়া শহরের উপর দিয়ে দিনের বেলায় চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষিত ট্রলি, ট্রাক্টর, বাস, রিকশা, অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের ওঠানো ও নামানো, অবৈধভাবে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান চলাচল, যত্রতত্র যানবাহন পার্কিং, অনেক সড়কের পাশে ফুটপাত না থাকা, সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রায় প্রতিদিন শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রধান সড়কে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ট্রাক, যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহন অনিয়ন্ত্রিতভাবে পার্কিংসহ চলাচল করায় তীব্র যানজট হচ্ছে।

এসব কারণে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে কোর্টের সম্মুখ পর্যন্ত, কাজির পয়েন্ট, ময়নার পয়েন্ট, ষোলঘর থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত বলাকা রাস্তায় যানজট বেশি থাকে। এছাড়াও সড়কের সংস্কার কাজের ধীরগতির কারণে শহরের কাজির পয়েন্ট, কালীবাড়ী সড়ক, ট্রাফিক পয়েন্ট চত্বর, ড্রেইন নির্মাণে ধীরগতির কারণে ষোলঘর থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হলে বাধ্য হয়ে বলাকা আবাসিক এলাকার ভিতরের সরু সড়ক ও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে কোর্টের সম্মুখ পর্যন্ত সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট সৃষ্টি হয়।

শহরের জামাই পাড়া এলাকার ম্যাকানিক্যল ইঞ্জিনিয়ার খছরু আহমদ জানান, যানজট ও ধুলার কারণে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠান খোলার পর থেকে ধুলোয় বসা যায় না। যানজটের কারণে আদালতগামী ও শহরে যাতায়াতকারী যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ফুটপাত না থাকায় মানুষ হেঁটেও যাতায়াত করতে পারছে না।

ডিএস রোডের ব্যাবসায়ী জুনেদ আহমদ জানান, সড়ক সংস্কার করতে গিয়ে সড়ক খননের মাটি ইচ্ছেমতো শহরের প্রধান সড়কের ওপর দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে। এতে সড়কে মাটি পড়ে ধুলার সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ঠিকমতো পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ঝাড় দিচ্ছে না। ফলে বাজারের বিভিন্ন জায়গায় ময়লার স্তূপ জমে আছে। নির্বাচনের কারণে সবাই ব্যস্ত। তাই এসব দেখার কেউ নাই।

ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, গার্লস স্কুলের সামনে প্রধান সড়কে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে পথচারী যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। উপরন্তু সড়কে ধুলা ওড়ার কারণে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বেশি। মাঝে মাঝে নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে।

প্রবীণ আইনজীবী অমিয়াংশু চৌধুরী জানান, বর্তমানে যেভাবে জনসংখ্যা বেড়েছে ও শহরে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে তাতে শহরের প্রতিটি সড়কের প্রস্থ বাড়ানো দরকার। সেইসঙ্গে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি। যানজটের কারণে ১০ মিনিটের পথ যেতে সকাল বেলায় সময় লাগে এক ঘণ্টা।

সুনামগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেরগুল আহমদ বলেন, সুনামগঞ্জ শহরে গত এক দশকে লোকসংখ্যা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে ঘরবাড়ি। বর্তমানে ছোট্ট এ শহরকে ঘিরে কয়েক হাজারের মতো ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত ভ্যান ও মোটরসাইকেল বেড়েছে। কিন্তু সবগুলো সড়কের প্রস্থ বাড়েনি। যানজট নিরসনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে লোক নিয়োগ ছাড়াও সড়কের প্রস্থ বাড়ানো দরকার।

(ঢাকাটাইমস/৯জানুয়ারি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :