প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে নারীর শ্লীলতাহানি, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে প্রকাশ্যে এক নারীকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান টিটুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকালে বুড়িচং থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শ্লীলতাহানির শিকার ওই নারী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের মেয়ে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক আহমেদ ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার ঢাকাটাইমস অনলাইনে ‘প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে নারীর শ্লীলতাহানি!’ শিরোনামে ভিডিওসহ একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এরপরই অভিযুক্ত টিটুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, নারীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় আজ বিকালে টিটু নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই নারী আদালতে যে মামলা করেছিলেন, সেই মামলায় মূলত তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সম্প্রতি ভুক্তভোগী ওই নারীকে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার একটি ভিডিও ঢাকা টাইমসের হাতে আসে। ভিডিওটি করেছিলেন ওই নারীর মেয়ে। যেখানে দেখা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারীকে অভিযুক্ত টিটু প্রকাশ্যে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করছেন। পরবর্তী সময়ে ধর্ষণের হুমকি দেন। এসময় উপস্থিত অনেকে টিটুকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। ভিডিওতে ভুক্তভোগী নারীর মেয়েকে বলতে শোনা যায়, ‘এর আগেও আপনি আমার মাকে গালিগালাজ করেছেন। গায়ে হাত তুলেছেন। নির্যাতন করেছেন।’
এদিকে হুমকির পর ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ওই নারীর বাড়িতে প্রবেশ করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন টিটু। এসময় ওই নারীর চিৎকারে বেশ কয়েকজন এগিয়ে আসেন। পরে অভিযুক্ত টিটু তাকে জখম করে পালিয়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। এই ঘটনায় বুড়িচং থানায় ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে আদালতের শরণাপন্ন হন ওই নারী। ১৯ ফেব্রুয়ারি করা মামলায় ওই নারী উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান টিটু প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করতেন এবং অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন।
এদিকে মামলার পর আদালত বুড়িচং থানা পুলিশকে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেয়। যা তদন্তের দায়িত্ব পান ওই থানার এসআই বিনোদ। গতকাল তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, শ্লীলতাহানির ঘটনায় এখনো তদন্ত চলছে। দ্রুতই তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে।
একই দিন মঙ্গলবার ভুক্তভোগী ওই নারী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমার স্বামী বাড়িতে না থাকার সুযোগে টিটু আমাকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দেন। পরবর্তী সময়ে আমার বাড়িতে প্রবেশ করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। আমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের মেয়ে হয়েও বর্তমানে নিরুপায়। তার (টিটু) অত্যাচারে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। মান-সম্মান শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া আমার স্বামীর বিরুদ্ধে পাঁচটি ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়েছেন টিটু।’
ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী জানান, পারিবারিক বিরোধের জেরে তাদেরকে প্রায়ই হয়রানি করা হচ্ছে। বিশেষ করে তার স্ত্রী ও মেয়েকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখানো হয়। অভিযুক্ত টিটুর পক্ষে স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতা কাজ করতে পারেন বলে জানান তিনি। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মিথ্যা মামলা হলেও টিটুর বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ আমলে নেয় না।
(ঢাকাটাইমস/১৬মার্চ/এসএস/জেবি)

মন্তব্য করুন