অনলাইনে পশুর হাট, প্রযুক্তি না বোঝায় বিপাকে খামারি-ব্যবসায়ীরা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ জুলাই ২০২১, ১১:৪৪ | প্রকাশিত : ১১ জুলাই ২০২১, ১১:০৯

করোনাকালে পশুর হাট না বসায় অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে বেচা-কেনা হচ্ছে কোরবানির পশু। দেশের অনেকে এলাকার মতো সাতক্ষীরায়ও জমে উঠেছে অনলাইনের পশুর হাট। তবে খামারি ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতা না থাকায় সুফল পাচ্ছেন না তারা। আগে থেকে তাদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিলে লাভবান হতেন তারা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে অনলাইনে কোরবানি পশুর হাট। বিক্রেতারা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে তাদের বিক্রয়যোগ্য পশুর ছবি, ভিডিও, বর্ণনা, দাম, মালিকের ঠিকানা ওয়েবসাইটে আপলোড করতে পারবেন। ক্রেতারা সাতক্ষীরা জেলা অথবা দেশের যে কোনো জায়গা থেকে পশু অর্ডার করতে পারবেন। এর ফলে প্রচলিত পশুর হাটে না যাওয়ার ফলে মানুষ একদিকে করোনাভাইরাস হতে রক্ষা পাবে, অন্যদিকে সাতক্ষীরা জেলার কোরবানি পশু জেলার বাইরে বিক্রির সুযোগ তৈরি হবে।

তবে অনলাইন প্লাটফর্মে পশুর ছবি আপলোড করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ খামারি ও ব্যবসায়ীরা। অনেকের ডিভাইস ও এ বিষয়ে জ্ঞান না থাকায় ছবি তুলে আপলোড করতে পারছেন না।

বিনেরপোতা এলাকার গরু ব্যবসায়ী আজহারুল ইসলাম বলেন, আমার একটি বাটন সেট রয়েছে। কিভাবে ছবি তুলতে হয় বা কোথায় ছবি দিতে হয়, সেটা আমি বুঝি না। সারা বছর কোরবানির হাটের দিকে চেয়ে থাকি। কিন্তু এ বছর পশুর হাট না বসায় খুবই বিপাকে আছি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সহিদুল ইসলাম বলেন, মাত্র কয়েক দিনে ৬০ লাখ টাকারও বেশি পশু বিক্রি হয়েছে। প্রচুর সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া করোনা রোধে যেহেতু পশুর হাট বন্ধ রয়েছে, তাই অনলাইন বা ব্যক্তিগতভাবে খোঁজখবর নিয়ে পশু বেচা-কেনা ছাড়া বিকল্প নেই।

খামারি ও ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যক্তিদের কিছু সমস্যা রয়েছে। এবার যেহেতু নতুন, তাই কিছুটা সমস্যা হবে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পশুর ছবি আপলোড করতে উপজেলা পর্যায়ের প্রাণিসম্পদ অফিস সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। ‘

তিনি বলেন, আমরা একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে দিচ্ছি। পশু ক্রেতাগণ পোস্টকৃত ছবি দেখে পশুর মালিকের সাথে সরাসরি দরদাম করে পশু কিনতে পারবেন।

অপরদিকে পশু কেনা-বেচা তেমন না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। সারা বছর পশু লালন-পালন করে কোরবানির ঈদে বিক্রি ভালো না হলে ক্ষতির আতঙ্কে ভুগছেন তারা।

ধুলিহর এলাকার খামারি আব্দুল হাই বলেন, গরু মোটাতাজাকরণ খামার করে বিপাকে আছি। আমার খামারে ১০টি গরু আছে। প্রতিটির দাম দেড় থেকে তিন লাখ টাকা। গো-খাদ্যের দাম বেশি। সারা বছর পালন করতে ব্যাপক টাকা খরচ হয়েছে। আশায় থাকি কোরবানির ঈদের। আজ পর্যন্ত মাত্র একটি গরু বিক্রি হয়েছে। তাও বেশ কম দামে। কোরবানিতে গরুগুলো বিক্রি না হলে নিঃস্ব হয়ে যাব।’

খুলনা বিভাগের অন্যতম বৃহৎ পারুলিয়া গরুহাটের ইজারাদার আল ফেরদৌস আলফা জানান, করোনার কারণে গরুহাট বন্ধ রয়েছে। প্রান্তিক কৃষক বা অসহায় নারীরা গরু পালন করে ঈদের হাটে বিক্রি করে লাভবান হয়। কিন্তু করোনার কারণে প্রশাসন হাট বন্ধ করে রাখায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এবিষয়ে জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বলেন, জেলায় কোনো প্রকার গরুর হাট বসবে না। যদি জনপ্রতিনিধি, বাজার কর্তৃপক্ষ, হাট ইজারাদারসহ যেকোন রাজনৈতিক দলের নেতারা হাট বসানোর চেষ্টা করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের ব্যবস্থাপনায় ‘সাতক্ষীরা হাট’ নামে অনলাইন হাটে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং তারা অনলাইনের মাধ্যমে গরু বিক্রয়ের নিবন্ধন করতে পারবেন। তাই আতঙ্কের কারণ নেই। হাট বন্ধ থাকলেও অনলাইনে এবার পশুর কেনাবেচার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে খামারিদের বাড়তি খরচ কমবে। অনলাইনে পশু কিনতে ফেসবুক পেইজে বিভিন্ন দামের পশুর বিবরণ দেওয়া আছে। পছন্দ মতো পশু কেনা-বেচা করা যাবে।

(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :