হতাশ পরিবার

কেন সাত বছরেও উদঘাটন হয়নি ফারুকী হত্যার রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২১ জুলাই ২০২১, ১৩:২১| আপডেট : ২১ জুলাই ২০২১, ১৩:৩০
অ- অ+

রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারে নিজের বাসায় দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন টেলিভিশনে ইসলামি অনুষ্ঠান উপস্থাপক ও হাইকোর্ট মাজার মসজিদের খতিব মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী। প্রায় সাত বছর আগে হওয়া এই হত্যা মামলার রহস্য এত দিনেও উদঘাটন হয়নি। এরই মধ্যে ছয়জন তদন্ত কর্মকর্তার হাতবদল হয়েছে মামলাটি। দুই সপ্তাহ আগে সিআইডির একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের এক দিন পর ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট ফারুকীর ছেলে ফয়সাল ফারুকী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আট-নয়জনকে আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা ও ডাকাতির অভিযোগে মামলা করেন। বিভিন্ন সময় সন্দেহভাজন হিসেবে জেএমবি, আনসারুল্লাহ ও হুজির ১৩ সদস্যসহ ১৬ জন গ্রেপ্তার হয় এই মামলায়।

সিআইডি বলছে, চারটি বিষয় সামনে রেখে তারা মামলা এগিয়ে নিতে কাজ করছে। দ্রুতই আদালতে মামলার প্রতিবেদন তারা দাখিল করতে পারবে।

জানা যায়, ঘটনার দিন এশার নামাজের পর ছয়-সাতজন যুবক মাওলানা ফারুকীর বাসায় ঢোকেন। এরপর তার স্ত্রী, ছেলেসহ তিনজনের হাত-পা বেঁধে তাদের আলাদা কক্ষে আটকে রাখে। তারপর দুর্বৃত্তরা ফারুকীকে গলা কেটে হত্যা করে।

প্রথমে স্থানীয় থানার পুলিশ ও পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে ফারুকী হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ডিবিতে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ইন্সপেক্টর জুলহাস উদ্দিন আকন্দকে। পরে মামলাটি ডিবি থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। সেখানে তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির ইন্সপেক্টর আরশেদ আলী মণ্ডল।

এরপর আরও দুবার ফারুকী হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়। সিআইডিতে এই মামলার দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন সিরিয়াস ক্রাইম স্কোয়াডের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রাজীব ফরহান। তার বদলির পর চলতি মাসে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিসানুল হক জিসান।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ফারুকী হত্যার ঘটনার পর অনেক জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে। আবার অনেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে। ফারুকী হত্যার ঘটনায় জড়িত কেউ যদি কারাগারে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় তাহলে তাদের চিহ্নিত করা দুরূহ। তাছাড়া জমিজমা বা অন্য কোনো বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে কি না সেই বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি চুরি বা ডাকাতির উদ্দেশ্যে সেখানে প্রবেশের পর মওলানা ফারুকীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এসব বিষয় সামনে রেখে তদন্ত এগোচ্ছে বলে জানায় সিআইডি।

সাত বছরেও মাওলানা ফারুকী হত্যার প্রকৃত খুনিরা ধরা না পড়ায় হতাশ তার পরিবারের সদস্যরা। ফারুকীর বড় ছেলে আহমেদ রেজা ফারুকী হতাশ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত বছরেও প্রকৃত খুনিরা গ্রেপ্তার হয়নি। বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে জড়িত কত জঙ্গি, অপরাধী ও খুনি ধরা পড়ে, কেবল আমার বাবার খুনিরাই ধরা পড়ে না। আমরা দিন দিন হতাশ হচ্ছি।’

ফারুকীর মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিসানুল হক জিসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে আমার কাছে মামলার ফাইল এসেছে। সবকিছু পর্যালোচনা শুরু করেছি। আশা করছি দ্রুতই এই হত্যারহস্য উদঘাটন করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে পারব।’

ফারুকী হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে যেসব জঙ্গি গ্রেপ্তার

ফারুকী হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বিভিন্ন সময় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত শায়খ মোযাফফর বিন মুহসিনসহ আনসারুল্লাহর তিনজন, জেএমবির সাতজন ও হরকাতুল জিহাদের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে উস্কানিদাতা হিসেবে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় শায়খ মোযাফফর বিন মুহসিনকে।

এ ছাড়া জেএমবি সদস্য তারিকুল ইসলাম মিঠু ওরফে তারেক, আবদুল গাফফার, আলেক বেপারি, মিন্টু প্রধান, আলেক বেপারীর ভায়রা মোস্তফা আহমেদ রাসেল ও খোরশেদ আলমকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ফারুকীর ভক্ত শরীফুল ইসলাম ও মাহমুদা খাতুন ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার হলেও তারা জামিনে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান তদন্তসংশ্লিষ্টরা।

(ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/এসএস/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিএনপি একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
ঢাকা-বেইজিং অংশীদারিত্ব এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে: চীনা রাষ্ট্রদূত
বেইলি রোডে ৩৪ কোটি দামের কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিদেশি মদসহ ৪ জন আটক
দেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৮২০ ডলার, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা