‘নারীর পক্ষের রাজনীতি বেছে নিতে হবে’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘যে রাজনীতি নারীর পক্ষে, মানুষের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে সে রাজনীতি বেছে নিতে হবে। যে রাজনীতি নারীর অধিকারের স্বীকিৃতি দেয় না, তার কী দরকার?’
বৃহস্পতিবার জাতীয় নারী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত সভায় শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নারী সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল। রান্না করবে কে? নারী। শেলাই করবে কে? নারী। ঘর ধুয়ামোছা করবে কে? নারী। কিন্তু যখনই এর সঙ্গে অর্থপ্রাপ্তি যোগ হয়, তখন দর্জি পুরুষ, বাবুর্চি পুরুষ এবং ক্লিনারও পুরুষ। যে কাজ আর্থিক সংশ্লেষ ছাড়া করা হয় সেটি নারীর কাজ। আর অর্থ যোগ হলেই তা পুরুষের। এটি সমাজের তৈরি করা।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাকরিতে অনেক জায়গায় দেখছি নারী। ৭২-এর সংবিধানে নারীর সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আজ যারা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করেন সেখানেও ক্ষমতায়নে নারীর অবস্থান তৈরি হয়নি। এটি সত্য, আমাদের প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা নারী। অথচ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারীর অবস্থান এখনও কম। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এতো বিশাল মন্ত্রণালয়। আমি মন্ত্রী নারী। মাঠ পর্যায়ে অনেক শিক্ষক আছেন নারী। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারী খুব কম।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৭ সালের নারী নীতিমালা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। নারী নীতির মৌলিক কতগুলো বিষয় ছিল। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারসহ বিভিন্ন মৌলিক বিষয় ছিল। কিন্তু ২০০৫ সালে রাতের অন্ধকারে সেই নারী নীতিকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে একেবারে ধ্বংস করে দেওয়া হলো। কারণ তখন যে সরকার সেই সরকারের মূল অংশে ছিল একটি মৌলবাদী দল। মূল দলটিও নারী বিদ্বেষী, তার যথেষ্ট প্রমাণও আছে। নারী নীতিটাকে পাল্টে ফেলার পর যেটা হলো- আবার যখন ২০১১ সালে নারী নীতিটি করলাম, তখন মৌলিক যে পরিবর্তন আনা হয়েছিল, আমাদের রাজনীতির যে চেহারা এতোখানি পাল্টে গেল আমরা ১৯৯৭ সালের নীতিমালার মৌলিক জায়গায় ফিরে যেতে পারিনি। কিন্তু আমাদের ওই জয়গায় যেতে হবে।’
নারীর অধিকার ও রাজনীতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যে রাজনীতি মানুষের স্বীকিৃত দেয় না। মানুষের অধিকারের স্বীকিৃতি দেয় না। নারীর মানবাধিকারের স্বীকৃতি দেয় না। সেই রাজনীতির কী দরকার? যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, নারী নির্যাতন করেছে, যারা সেই অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, নারীর অধিকার লঙ্ঘণ করার সমস্ত কায়দা কানুন তাদের মাধ্যমেই হবে। তাহলে নারী কেন সেই রাজনীতিকে সমর্থন দেবে? সমর্থন দেওয়া উচিত নয়। যারা প্রগতির কথা ভাবেন তাদেরও সেই রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার কারণ নেই। নারীর অধিকার তো রাজনৈতিক বিষয়।’
(ঢাকাটাইমস/১০মার্চ/কেআর/কেএম)

মন্তব্য করুন