মামলা উঠল, জোড়া লাগল ৪৫ দম্পতির সংসার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
| আপডেট : ০৮ জুন ২০২২, ২১:০৯ | প্রকাশিত : ০৮ জুন ২০২২, ২১:০৭

আদালতের রায়ে সুনামগঞ্জে জোড়া লাগল ৪৫ দম্পতির সংসার। ৪৫ দম্পতির ব্যতিক্রমী এ রায় শুনে আদালত প্রাঙ্গণে বাদী-বিবাদী ও স্বজনদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।

বুধবার সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন ব্যতিক্রমী এ রায় দেন। এর আগেও তিনি কয়েক দফায় ১৯৭টি মামলা নিস্পত্তি করে পারিবারিক মিলনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেন।

আদালত সুত্রে জানা যায়, যৌতুকসহ নানাবিধ কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে সংসার বিতারিত ৪৫ নারী তাদের স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন।

বিচারক উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে সন্তানদের ও তাদের ভবিষ্যৎ মঙ্গল কামনায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে মামলা নিষ্পত্তি করেন। আসামিকে কারাগারে না পাঠিয়ে সংসার জীবন চালিয়ে যাওয়ার শর্তে বাদীদের সঙ্গে আপস-মীমাংসায় উভয়পক্ষই বিচারকের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আদালতের আপসনামায় ৪৫ দম্পতি অঙ্গীকার করেন, সন্তানাদি নিয়ে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে সংসার করবেন তারা। সংসারে শান্তি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করবেন না। স্বামী-স্ত্রী উভয়কে যথাযোগ্য মর্যাদা দেবেন। স্বামী তার স্ত্রী বা তার মা-বাবা ও অভিভাবকের

কাছে যৌতুক দাবি করবেন না। পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য ও বিরোধ দেখা দিলে নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করবেন। স্বামী কখনো স্ত্রীকে নির্যাতন করবেন না, স্ত্রীকে নির্যাতন করলে বা যৌতুক দাবি করলে স্ত্রী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। ৪৫ দম্পতি আবারও সংসারে ফিরতে পেরে তারাও খুশি এবং ঝগড়া না করে এখন থেকে সুখে শান্তিতে সংসার করবেন বলে জানান তারা।

আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ৪৫টি পরিবারকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য এরকম আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন দম্পতিরা সন্তানাদি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আগের মতো সংসার করতে পারবেন। বাবা ও মায়ের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার কারণে এসব পরিবারের শিশুরা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। দীর্ঘদিন ধরে মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে উভয় পরিবারের আর্থিক ও মানসিক ক্ষতি হয়েছে। এসবের প্রভাব এসেছে পড়েছে তাদের সন্তানদের ওপর। ফলে শিশু সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন, আদালত পৃথক ৪৫ টি নারী-শিশু নির্যাতন দমন মামলায় একসঙ্গে যুগান্তকারী একটি রায় দিয়েছেন। আদালতে যে শুধু শাস্তি হয় না পরিবারে শান্তিও ফেরানো হয়।

(ঢাকাটাইমস/৮জুন/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :