পাটের আঁশে ক্ষতি পাটকাঠি দিয়ে পুষিয়ে নিতে চান চাষিরা

নুরুল ইসলাম, (সালথা) ফরিদপুর
  প্রকাশিত : ০৫ আগস্ট ২০২২, ১৫:১৮
অ- অ+

ফরিদপুরের সালথায় এবার পাটের আঁশের চেয়ে পাটকাঠির কদর বেড়েছে কয়েক গুণ। বাণিজ্যিকভাবে পাটকাঠির ব্যবহার বৃদ্ধি ও দাম বেশি হওয়ায় এ কাঠির যত্ন নিচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়া চলতি মৌসুমে পানির অভাবে পাটের আঁশে যে ক্ষতি হয়েছে পাটকাঠি দিয়ে তা পুষিয়ে নিতে চান চাষিরা।

কৃষকরা জানিয়েছেন- বৃষ্টি আর বর্ষার পানির অভাবে এবার পাট জাগ দিতে হিমশিম খেতে হয় চাষিদের। এমনকি পানির অভাবে ক্ষেতেই পাট শুকিয়ে মরে গেছে। এমন পরিস্থিতে কৃষকরা মাটি খুঁড়ে পাট জাগ দিতে বাধ্য হন। এতে নষ্ট হয়ে যায় পাটের রং। এতে পাটের দামও তুলনামূলক কম পাচ্ছেন কৃষকরা। তবে পাটকাঠির রং কিছুটা নষ্ট হলেও দামে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই পাটের আঁশের লোকসান পুষিয়ে নিতে পাটকাঠিতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন চাষিরা।

উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের রঘুয়ারকান্দী গ্রামের পাটচাষি হারুন মিয়া ও হাফেজ মোল্লা ঢাকাটাইমসকে বলেন, পানির সমস্যার কারণের এবার পাট নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। মাটি খুঁড়ে আর নোংরা জলাশায় পাট জাগ দিয়ে পাটের রং নষ্ট হওয়ায় দাম প্রতিমণে চার থেকে পাঁচশ টাকা কম পেতে হচ্ছে। তবে পাটকাঠির রঙের তেমন পরিবর্তন হয়নি। আবার পাটকাঠির দামও বেশি। তাই পাটপাঠিতে গুরুত্ব দিয়ে যত্ন নিতে শুরু করেছি।

তারা জানান, এক বিঘা জমিতে ১৮ থেকে ২০ মণ পাট হয়। তা থেকে প্রায় ২ হাজার আঁটি কাপকাঠি বের হয়। প্রতি আঁটি পাটিকাঠি পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করছি। এতে প্রতিবিঘা জমিতে প্রায় ১০ হাজার টাকার পাটকাঠি বিক্রি করতে পারবো।

উপজেলা ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা সাধুপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও মনির মোল্লা ঢাকাটাইমসকে বলেন, পাটকাঠি আমাদের গ্রামঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। মাটির চুলায় রান্নার প্রধান জলানি হিসেবে পাটকাঠির ব্যবহার করি।

তারা বলেন, সালথায় দুটি পাটকাঠির মিল রয়েছে। সেই মিল থেকে ক্রেতা এসে কিনে নেয়। এতে এবার পাটকাঠি বিক্রি করে পাটের লোকসানও অনেকটা পুষিয়ে যাবে। পাটের পাশাপাশি পাটকাঠিরও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার বাড়ায় একই ফসলে আমাদের বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জীবাংশু দাস ঢাকাটাইমসকে বলেন, জ্বালানী হিসেবে, বাড়িঘর ও সবজি ক্ষেতের বেড়া, মাচা, পান বরজ, ইত্যাদি কাজে পাটকাঠির ব্যবহার দীর্ঘকাল আগে থেকেই হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে ব্যাপক হারে পার্টিকেল বোর্ড তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে পাটকাঠি। পাটখড়ি বা পাটকাঠির কার্বন চারকোল নামে পরিচিত। চীনসহ বিভিন্ন দেশে পাটকাঠি পুড়িয়ে পাওয়া কার্বন থেকে আতশবাজি, কার্বন পেপার, প্রিন্টার ও ফটোকপিয়ারের কালি, মোবাইলের ব্যাটারি, দাঁত পরিস্কারের ওষুধ ও সারসহ নানা পণ্য তৈরি করা হয়।

তাছাড়া পাটকাঠি থেকে একটিভেটেড কার্বন ও উৎপাদন করা হয় যা ওয়াটার পিউরিফিকেশন প্লান্টে ব্যবহার করা হয়। এসব কারখানা এ এলাকায় স্থাপন করা গেলে পাটকাঠির চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।

(ঢাকাটাইমস/৫আগস্ট/এসএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
‘অভিমানে’ দলের নেতৃত্ব ছাড়ছেন শান্ত!
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত, মোট প্রাণহানি ৫৬ হাজার ছাড়িয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় নামল চালকবিহীন ‘রোবোট্যাক্সি’
গোয়ালন্দে ৫২ লিটার চোলাইমদসহ দুই মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা