তাজিয়া মিছিল নির্বিঘ্ন করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা

আজ মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে পবিত্র আশুরা। এ উপলক্ষে রাজধানীর হোসাইনী দালান ইমামবাড়া, বড় কাটারা ইমামবাড়া এবং এর আশেপাশের শিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া (শোক) মিছিলকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আর এই নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ(ডিএমপি)।

দিবসটি যাতে নির্বিঘ্নে পালন করা যায় সেজন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। আশুরাকে ঘিরে নাশকতার কোনো আশঙ্কা নেই বলেও এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর হোসাইনী দালান ইমামবাড়া, বড় কাটারা ইমামবাড়া এবং এর আশেপাশের শিয়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করছেন। নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন র‌্যাব সদস্যরাও।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আয়োজকরা। এর আগে মিছিলের মহড়া দিয়েছেন শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন। সকাল ১০টায় মিছিল হোসাইনী দালান থেকে বের হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করবে।

এছাড়া মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বকশিবাজার, লালবাগ, ফরাশগঞ্জ, পল্টন, মগবাজার থেকেও তাজিয়া মিছিল বের হয়। এর মধ্যে হোসাইনী দালান থেকে সবচেয়ে বড় মিছিল বের হয়। এ মিছিলে হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশুর পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। লাল-কালো আর সবুজ অক্ষর-খঁচিত নিশান হাতে তারা খালি পায়ে মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতমে শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়ে রাজপথে।’

অন্যদিকে, সুষ্ঠুভাবে তাজিয়া মিছিল সম্পন্ন করতে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি বহন নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে পুলিশ ও র‌্যাব।

চকবাজার থানার এসআই উদয়ন বিকাশ বড়ুয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘৫০০ এর বেশি পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বিভিন্ন স্তরে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন।’

হোসাইনী দালান ইমামবাড়ার যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ বাকের রেজা মাজলুম বলেন, ‘আশুরার তাৎপর্য মেনে প্রতিবছর আমরা দিনটি উদযাপন করি। কারবালার সেই বিয়োগান্তক ঘটনাকে স্মরণ করি।’

মিছিল পরিচালনা কমিটির সুপারিনটেনন্ডেন্ট এম এম ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘পুলিশের নির্দেশটা মেনে আমরা দিনটি পালন করছি। ২০১৫ সালে হামলা হয়েছিল। আমরা আশা করছিলাম সেই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে পবিত্র আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলায় দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। ওই ঘটনায় ঢাকার চকবাজার থানায় একটি মামলা হয়। উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ওই হামলার পর থেকে প্রতিবছর আশুরার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এবারও আশুরাকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

(ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/ওএফ/এফএ)