ইরানে অন্তত ৬০ নারীসহ সাত শতাধিক বিক্ষোভকারী আটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:২৬ | প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০৭

ইরানে হিজাব ইস্যুতে পুলিশি হেফাজতে মাহশা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভে শুধুমাত্র একটি প্রদেশেই অন্তত ৬০ নারীসহ সাত শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল-আরাবিয়া।

ইরানের গুইলান প্রদেশের পুলিশ প্রধান জেনারেল আজিজুল্লাহ মালেকি জানান, ৬০ নারীসহ ৭৩৯ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছেন তারা।

এর আগে গতকাল শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন।

যদিও ইরানের মানবাধিকার সংগঠন (আইএইচআর) দাবি করেছে যে, বিক্ষোভে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনিকে হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে আটক করে দেশটির মোরালিটি পুলিশ। তারপর তাকে পুলিশের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়। গত শুক্রবার তিন দিন কোমায় থাকার পরে মৃত্যুবরণ করেন মাহশা আমিনি।

পুলিশের দাবি, মাহশা আমিনি হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেছেন। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, পুলিশের ভ্যানে তোলার সময় মাহশা আমিনিকে নির্যাতন করা হয়। একারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশটির ৮০টি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হচ্ছে। বিক্ষোভ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাদের গুলিতে প্রতিদিন হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কুর্দিস্তানে মাহশা আমিনির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তার জানাজা শেষ হওয়ার পরে কিছু মানুষ চলে যায়, আর কিছু মানুষ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। তারপর তারা গভর্নর অফিসের সামনে জড়ো হয়। সেখানেও তারা সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। তখন নিরাপত্তা রক্ষীরা টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

সেখান থেকেই দেশজুড়ে হিজাবের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।

ইরানের সরকার বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির নেটওয়ার্ক কার্যক্রম ধীরগতি করে দেওয়া হয়েছে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামসহ অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহারেও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও বিক্ষোভের তীব্রতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিক্ষোভের মধ্যেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর হিজাব ছাড়া ফেসবুকে ভিডিও আপলোডের অভিযোগে দেশটির মানবাধিকারকর্মী মেলিকা কারাগোজলুকে পৌনে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লব হওয়ার পর থেকে নারীদের জন্য হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক। দেশটির মোরাল পুলিশ এই ড্রেস কোড কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করে।

কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ড্রেস কোডের নিয়ম বাস্তবায়নে বিভিন্ন মানুষ বিশেষত তরুণীদের সঙ্গে মোরাল পুলিশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডকে ঘিরে কড়া প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা অনেক সময় জোর করে নারীদেরকে পুলিশের গাড়িতে তোলে।

২০১৭ সালে কয়েক ডজন নারী জনসম্মুখে হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানান। তখন কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/আরআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

ভারতে লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট চলছে

কলকাতা হাইকোর্টের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ মমতার

ভারী বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত কারাগার, পালালো শতাধিক বন্দি 

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বে ১৩ রাজ্যের ৮৮ আসনে ভোটগ্রহণ শুক্রবার

ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে চায় আর্জেন্টিনা, কিন্তু কেন?

স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, দায়িত্বপালন থেকে বিরত থাকবেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী 

ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত: সিরিয়া কি নতুন যুদ্ধক্ষেত্র হবে?

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিবে জ্যামাইকা

পাকিস্তানের পর এবার শ্রীলঙ্কা সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :