ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল মাঠে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২২, ১৫:৩৯ | প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর ২০২২, ২১:২৫

ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় একটি ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৪ জন হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে পদদলিত হয়ে বেশীরভাগ সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর মালাংয়ে স্বাগতিক আরেমা এফসি ৩-২ গোলে সুরাবায়ার ক্লাব পারসেবায়ার কাছে হেরে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

পরাজয়ের হতাশা থেকে আরেমা এফসির সমর্থকরা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের দিকে বোতলসহ অন্যান্য বিভিন্ন জিনিস ছুঁড়তে থাকেন। এমনকি প্রতিবাদের এক পর্যায়ে তারা কানজুরুহান স্টেডিয়ামের মাঠে প্রবেশ করে আরেমার কর্তৃপক্ষের বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের একটাই প্রশ্ন ছিল ২৩ বছর ঘরের মাঠে অপরাজিত থাকা দলটি এভাবে কেন পরাজিত হবে। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ স্টেডিয়ামের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে উশৃঙ্খল সমর্থকরা পুলিশের পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। যদিও ফিফার আইনানুযায়ী স্টেডিয়ামে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতিতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী কোনো কিছু ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।

এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা দৌড়ে স্টেডিয়ামের বাইরে আসতে চাইলে পদদলিত হয়ে বেশীরভাগের মৃত্যু হয়েছে, অনেকেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। স্টেডিয়ামের ভেতর ৩৪ জন মারা গেছেন যাদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন বলে স্থানীয় পুলিশ নিশ্চিত করেছে। বাকিরা হাসাপাতালে নেয়ার পর মৃত্যুবরণ করেছেন। এদিকে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে তারা। সংবাদমাধ্যমকে দেশটির যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী জাইনুদিন আমালি বলেন, দুঃখজনক এ ঘটনা এমন সময় ঘটল, যখন ফুটবলের ভক্ত-সমর্থকরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।

ইস্ট জাভা পুলিশের প্রধান নিকো আফিন্তা রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘পুলিশের ওপর আক্রমন চালানোর কারণে আমরা শেষ পর্যন্ত টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিই। তার আগে যথাযথ ভাবেই তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল।’

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ৩০০রও বেশী মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আফিন্তা জানিয়েছেন মৃত্যুর সংখ্যা হয়তো আরো বাড়তে পারে। কারণ আহতদের মধ্যে প্রায় ১৮০ জনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

ইতোমধ্যেই ইন্দোনেশিয়ান সকার অ্যাসোসিয়েশন প্রিমিয়ার সকার লিগ লিগা ১ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। একইসাথে মৌসুমের বাকি সময়টা আরেমাকে আর কোনো ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ দেয়া হবে না বলেও বিবৃবিতে জানিয়েছে।

আগামী বছর ২ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় ফিফা অনুর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা রয়েছে, যেখানে ২৪টি দল অংশ নিবে। স্বাগতিক হিসেবে ইন্দোনেশিয়া সরাসরি এই যুব বিশ্বকাপে অংশ নেবার সুযোগ লাভ করেছে। আমালি বলেছেন এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ইমেজকে নিশ্চিতভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

এদিকে মালাংয়ের স্থানীয় পুলিশ প্রধান ফেরলি হিদায়াত বলেছেন গতকাল স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৪২ হাজার সমর্থকদের মধ্যে বেশীরভাগই আরেমানিয়াস ছিল। কারণ যেকোনো ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা এড়াতে আয়োজ করা পারসেবায়ার সমর্থকদের স্টেডিয়ামে প্রবেশে নিষিদ্ধ করেছিল।

ঢাকাটাইমস/০২অক্টোবর/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :