নির্বাচন সামনে রেখে বড় দুই দলের নজর ছোট দলের দিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২২, ১২:৫০ | প্রকাশিত : ০৪ অক্টোবর ২০২২, ০৯:২৩

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির কাছে ছোট ছোট দলের কদর বাড়ে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তাদের জোটের পরিধি এবং শক্তি বাড়াতে এবারও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে জোটভুক্ত করতে আলোচনা চলিয়ে যাচ্ছে।

স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোকে দলে টানার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীদের ১৪দলীয় জোট। অপরদিকে বাম, ডানসহ বাকি সব বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে একই ধরনের সমঝোতা করতে সক্রিয় বিএনপি।

১৪ দলীয় জোটকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ১৪ দলীয় নেতারা বলেন, আমরা ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী নির্বাচন উপলক্ষে অনেক দল আছে জোট করতে চায়। ১৪ দলীয় জোটকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজন মনে করলে তাদের জায়গা দেওয়া হতেও পারে।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপি সরকার পতনের লক্ষ নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। তাদের সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ২০ দলীয় জোট। বিএনপিসহ সবাই এক হয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের দাবি বাস্তবায়ন করতে কাজ করবে।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার স্বপক্ষের দল ও বামপন্থী দলের সমন্বয়ে একটি ১৪ দলীয় জোট গঠন করে। ১৪ দলীয় জোট গঠন করে সরকার ক্ষমতায় আসলেও সরকারে ছোট দলগুলোকে সুযোগ কম দেওয়ায় ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটের শরীক দলগুলোর সম্পর্কের অবনতি হয়। এমনকি সরকারের বিপক্ষে তারা প্রকাশ্যে কথা বলে। এছাড়া জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অংশীদার ছিল।

তবে এখন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন প্রকাশ্যে চলে আসছে। কারণ আওয়ামী লীগ মনে করছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিএনপির সঙ্গে ভিতরে ভিতরে সরকার পতনের আন্দোলনে যুক্ত হয়ে ইন্দন দিচ্ছে।

এমনকি গত মাসে জিএম কাদের বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেছেন, তারা আওয়ামী লীগের জোটে নেই।

খোজঁখবর নিয়ে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এখন ১৪ দলীয় জোটের সদস্য দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে। এছাড়া গত আগস্ট মাস ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ মার্চ তার 'আদর্শগত জোটের' অংশীদারদের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটের ব্যানারে অংশগ্রহণ করবে জানা গেছে

১৪ দলের প্রধান সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিএনপি যদি সরকার পতনের আন্দোলন করে করুক, আমরাও ১৪দল নেতাকর্মীরা মাঠে আছি।’

বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার যতোই পুলিশ প্রশাসন দিয়ে দমানোর চেষ্টা করুক বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে আছে, থাকবে। সরকারকে হটাতে সকল সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এজন্য নিজেদের হাতকে আরও শক্তিশালী করতে বিভিন্ন ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এক ও অভিন্ন এজন্ডা নিয়ে আলোচনা করছে। ইতোমধ্যে বিএনপি জোটের সদস্য ও সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনা শুরু করেছে। রবিবার দলটি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সঙ্গে আলোচনা করেছে। আলোচনায় তারা নির্বাচনের সময় নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন করার বিষয়ে একমত হয়েছে।

প্রথম দফায় বিএনপি নেতারা জাসদ (রব), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনসহ ২৩টি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে।

প্রথম দফার আলোচনার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, সরকার পতনের লক্ষ্যে বিভিন্ন দল যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে একমত হয়েছে। জোটের অন্যতম প্রধান শরীক জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সঙ্গে বিএনপি এই কৌশল অবলম্বন করে এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির ভেতর থেকেই জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার চাপ রয়েছে। এ ছাড়া জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপির সঙ্গে একই জোটে শরীক হওয়ার ক্ষেত্রেও অন্যান্য রাজনৈতিক দল অনীহা দেখিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা আন্দোলন সংগ্রাম কি করবো এনিয়ে আমাদের অনেক নেতা বক্তব্য দিয়েছে। নতুন জোটের ঘোষণা না পর্যন্ত আমরা নতুন করে কর্মসূচি দেব না।’

(ঢাকাটাইমস/০৪অক্টোবর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :