মায়োসাইটিসে আক্রান্ত সামান্থা, কী এই রোগ, কতটা মারাত্মক?

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর ২০২২, ১২:৪২

মায়োসাইটিস নামের একটি রোগ বাসা বেঁধেছে ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা সামান্থা প্রভুর শরীরে। শনিবার ইনস্টাগ্রামে নিজের বাম হাতের রক্তনালিতে ওষুধের নল লাগানো একটি ছবি প্রকাশ করে এ খবর নিজেই জানান অভিনেত্রী। ছবিটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সামান্থার সহকর্মী এবং অনুরাগীদের মধ্যে।

নিজের পোস্টে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘কয়েক মাস আগে আমার একটি অটো ইমিউন রোগ ধরা পড়ে। রোগটির নাম মায়োসাইটিস। ভেবেছিলাম, সুস্থ হওয়ার পরেই সে কথা জানাব। কিন্তু যা ভেবেছিলাম, সুস্থ হতে তার তুলনায় বেশি সময় লাগছে।’

কিন্তু কতটা মারাত্মক এই রোগ? তার আগে জানা দরকার, কাকে বলে ‘অটো ইমিউন’ রোগ। আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ করার যে ব্যবস্থা, তাকেই ‘ইমিউনিটি’ বা ‘অনাক্রম্যতা’ বলে। বাইরে থেকে কোনো বিজাতীয় পদার্থ কিংবা জীবাণু দেহে প্রবেশ করলে সেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে। আক্রমণ করে ওই জীবাণুকে।

কখনো কখনো সেই প্রক্রিয়াটিতেই গোলমাল দেখা দেয়। নিজদেহের কোনও অঙ্গকেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুল করে শত্রু ভেবে বসে। করে আক্রমণ। ফলে বাইরে থেকে আসা কোনো রোগজীবাণু নয়, শরীর নিজেই নিজের ক্ষতি করতে থাকে।

এ প্রসঙ্গে ভারতের এনআরএস হাসপাতালের চিকিৎসক সৌরভ দাস বলেন, ‘মায়ো’ শব্দের অর্থ পেশি আর ‘আইটিস’ মানে প্রদাহ। কাজেই সোজা ভাষায় বলতে গেলে মায়োসাইটিস হলো পেশির প্রদাহ। অটো ইমিউন মায়োসাইটিসে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুলবশত দেহেরই সুস্থ সবল পেশিকে আক্রমণ করে। ফলে এই বিরল সমস্যায় পেশি দুর্বল হয়ে যায়।’

কোন কোন লক্ষণে চেনা যায় এই রোগ?

প্রথম প্রথম দেহের বিভিন্ন অঙ্গে শুরু হয় ব্যথা। হাত, পা, ঘাড়ের পেশিতে যন্ত্রণা হয়। তবে যে কোনো পেশিতেই বাসা বাঁধতে পারে এই রোগ। পেশি এতই দুর্বল হয়ে যায় যে, রোগী মাঝেমধ্যেই পড়ে যেতে পারেন। একটানা দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে ক্লান্ত লাগে শরীর।

চিকিৎসক সৌরভ দাস বলেন, রোগী বেশ কিছুক্ষণ চেয়ারে বসে আছেন, যেই উঠতে যাবেন মনে হবে শরীর আর চলছে না।’ যদি খাদ্যনালির পেশি কিংবা ডায়াফ্রাম পেশিতে এই সমস্যা হয়, তবে খাবার খেতে বা শ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে। ঠিক মতো চিকিৎসা না হলে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থেকে মৃত্যুর আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

চিকিৎসা কী?

চিকিৎসক সৌরভ দাস জানান, মূলত ইমিউনো সাপ্রেসিভ ও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা হয় এই রোগের। তবে রোগের প্রকারভেদ রয়েছে। রোগের প্রকৃতি এবং রোগী চিকিৎসায় কতটা সাড়া দিচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই। কখনো কখনো সারা জীবনও ওষুধ খেতে হতে পারে রোগীকে।

সামান্থা অবশ্য জানিয়েছেন, তার চিকিৎসকরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী যে, তিনি সেরে উঠবেন। শারীরিক ও মানসিক ভাবে তার মধ্যে প্রবল টানাপড়েন চলছে। তবু অসুস্থতার দিনগুলো তিনি পেরিয়ে যেতে পারবেন বলেই বিশ্বাস এই নায়িকার।

(ঢাকাটাইমস/৩০অক্টোবর/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :