দেশে দুই দিনে গুলি, ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে সাতজনকে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর ২০২২, ২৩:২৬

গত দুই দিনে দেশে গুলি করে, ছুরিকাঘাত এবং পিটিয়ে সাতজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এসব ঘটনা ঘটে। ঢাকা টাইমসের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম ভূঁইয়া তানুকে (৩৮) গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাগেরহাট শহরের পূর্ব বাসাবাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তানু ভূঁইয়া বাড়ি বাগেরহাট শহরের পূর্ব বাসাবাটি এলাকার প্রয়াত আব্দুর রউফ ভূঁইয়ার ছেলে। তার স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ ফরিদ নামে এক যুবক তানু ভূঁইয়াকে গুলি করে হত্যা করেছে। পূর্ববিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড। তারা এই হত্যার বিচার দাবি করেছেন।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চোনপাড়ায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হত্যাসহ ২৩ মামলার আসামি সিটি শাহীন নিহত হন। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা টাইমসকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন। এ ঘটনায় র‌্যাবের পাঁচ সদস্যও আহত হন।

র‌্যাবের দাবি, র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সিটি শাহীন ও তার ১০/১২ জনের অস্ত্রধারী র‌্যাবকে উদ্দেশ করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব পাল্টা গুলি ছুঁড়লে গুলিবিদ্ধ হন শাহীন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সিরাজগঞ্জের করতোয়া নদী থেকে নিখোঁজের দুই দিন পর মনির হোসেন (১৮) নামে এক কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে শাহজাদপুর উপজেলার রুপপুর এলাকায় ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত মনির হোসেন শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের রূপপুর পুরানপাড়া গ্রামের রিকশাচালক হারুনার রশিদের ছেলে এবং শাহজাদপুর মাওলানা সাইফ এহিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।

নিহতের ফুপাতো ভাই ইমরান হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরের খাওয়া শেষে বন্ধুদের সঙ্গে নৌকায় বেড়াতে বের হয়। এরপর সে ওই দিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে নৌকা যোগে করতোয়া নদীতে ঘুরে বেড়ায়। রাতে বন্ধুদের সবাই বাড়ি ফিরে এলেও সে আর বাড়ি ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সেই থেকে দুদিন ধরে সে নিখোঁজ ছিল।

এদিকে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মাত্র ৫০ টাকা চুরির অপবাদে এক মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত শিক্ষার্থী মতলব দক্ষিণ এলাকার একটি মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণিতে পড়ে বলে জানা গেছে।

হত্যার শিকার শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কালিকাপুর গ্রামের গাজী বাড়ির এনামুল হক বাচ্চু গাজীর ছেলে জুবায়ের হোসেন (১৪) ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে বাড়ির পাশের খালপাড়ে যায়।

এ সময় পানির তৃষ্ণা পেলে ছাগল বেঁধে পাশের লক্ষ্মীপুর গ্রামের ছামাদ মুন্সির বাড়িতে পানি পান করতে যায়। পানি পান করে আসার পথে ৫০ টাকা চুরির অভিযোগে ছামাদ মুন্সির ছেলে লিটন জুবায়েরকে ধরে ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ব্যাপক মারধর করে। পরে খবর পেয়ে জুবায়েরের মা জুবায়েরকে উদ্ধার করে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এ ঘটনার পরদিন জুবায়ের মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চাঁদপুরে নেওয়ার পথে জুবায়ের মারা যায়।

সিলেটের গোলাপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মুজিবুর রহমান (৫০) নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ সময় আরও পাঁচজন আহত হন।

মৃত মুজিবুর রহমান উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের গোয়াসপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। তার পাঁচ ছেলেমেয়ে রয়েছে।

জানা গেছে, মৃতের নিকটাত্মীয় একই গ্রামের কেইস মিয়ার পরিবারের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। এরই জেরে সকালের দিকে মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কেইস মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। পরে কেইস মিয়া ও তার ছেলে আইন উদ্দিনসহ পরিবারের লোকজন মুজিবুরকে ধানক্ষেতে একা পেয়ে মারধর করেন।

ঘটনার পরপরই মুজিবুরকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

বগুড়ার কাহালুতে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর কিল-ঘুষিতে ভাসুর আব্দুল গফুর (৬৮) নিহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত জোসনা বেগমকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার সকালে উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের পলি ভুগইল মধ্যপাড়া গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত আব্দুল গফুর ওই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। আটক হওয়া জোসনাও (৪৬) একই গ্রামের চাঁন মিয়ার স্ত্রী। চাঁন মিয়া ও নিহত আব্দুল গফুর আপন দুই ভাই।

বগুড়ার একটি বিলিয়ার্ড ক্লাবে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে জুনায়েদ আল হাবিব বিপুল (২১) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে শহরের নামাজগড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বিপুল শহরের বাদুরতলা এলাকার মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে। তিনি ছাপাখানায় কাজ করতেন।

জানা গেছে, বিপুল শহরের নামাজগড় এলাকার তালুকদার মতি ম্যানশনের ৩য় তলার ব্রেক অ্যান্ড রান নামে একটি প্রতিষ্ঠানে বিলিয়ার্ড খেলছিলেন। এসময় ৬ থেকে ৮ জন যুবকের একটি দল সেখানে গিয়ে খেলার জন্য বিপুলকে সরে যেতে বলেন। এই নিয়ে ওই যুবকদের সাথে বিপুলের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে তারা বিপুলের শরীরের কয়েকটি স্থানে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বিলিয়ার্ড খেলাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ওই যুবক নিহত হয়েছে। তার বুকের নিচে এবং পেটের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শজিমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/আরকেএইচ/)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :