বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংবাদ সম্মেলন

দেশে এ বছর বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৭১ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর ২০২২, ২৩:৫৩
অ- অ+

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চলতি বছর ৭ দশমিক ১ মিলিয়নেরও বেশি বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যা ২০৫০ সালের মধ্যে ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়নে (এক কোটি ৩৩ লাখ) পৌঁছতে পারে। সোমবার রাজধানীর শেরাটন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

পাঁচ দিনব্যাপী তৃতীয় গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ শীর্ষক অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করে ডব্লিউএইচও। শরণার্থী এবং অভিবাসী স্বাস্থ্য সমস্যাগুলিকে ভালোভাবে মোকাবিলা, পেশাদার দক্ষতা ও সক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য দেশ ও অঞ্চলগুলোকে সহায়তা করতে পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এই বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসন সমস্যা বাড়াচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বে প্রতি ৮ জনের মধ্যে এক জন, ১ বিলিয়ন লোকের মধ্যে ২৮১ মিলিয়ন অভিবাসী এবং কয়েক মিলিয়ন মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়েছে।

ডব্লিউএইচও কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশ তিনটি বড় ধরনের অভিবাসী সমস্যা প্রত্যক্ষ করা গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মিয়ানমার থেকে আসা বাস্তুচ্যুতরা। মিয়ানমার তার বেশকিচু নাগরিককে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করেছে, যাদের প্রত্যেকের খাবার, চিকিৎসা ও বসবাসের ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার বাস্তুহীন এবং অভিবাসীদের স্বাস্থ্য ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক ডা. সান্তিনো সেভেরোনি বলেন, বার্ষিক গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ হচ্ছে ডব্লিউএইচও হেলথ অ্যান্ড মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের একটি ফ্ল্যাগশিপ এবং প্রচারের জন্য গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান। যা বাস্তবায়নের দিকে উদ্বাস্তু ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আঞ্চলিক এবং দেশীয় অফিসগুলোর সঙ্গে কৌশলগত এবং অপারেশনাল সহযোগিতা জোরদারের জন্য একটি বড় সুযোগ।

সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক ড. টেডরস আধানম ঘেব্রেইসুরস বলেন, অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতি শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ওপর গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। একই সঙ্গে সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য, আর্থিক বাধা, কুসংস্কার এবং বৈষম্য সবই উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। শরণার্থী গ্লোবাল স্কুলের মাধ্যমে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের আরও ভাল সেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে।

ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্বাস্থ্যের অধিকার সর্বত্র সব মানুষের জন্য সমান অধিকার। বিশেষ করে উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের জন্য প্রসারিত। কারণ সত্যিকার অর্থে সম্মানিত, সুরক্ষিত এবং পরিপূর্ণ হতে হলে, স্বাস্থ্যের অধিকার অবশ্যই সবচেয়ে প্রান্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ভালোভাবে দিতে হবে, যারা এখনো সমস্যায় এবং ঝুঁকিতে আছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রেক্ষাটের চিত্র ও চ্যালেঞ্জ একই নয়, সমাধানও একই না। তবে সব দেশ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এমন একজন স্বাস্থ্য কর্মী, যিনি প্রশিক্ষিত ও সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল।

ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালক রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ শুধুমাত্র তাদের ( রোহিঙ্গা) বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার সুবিধাই দেয়নি, আরও অনেক কিছু করেছে। যার মধ্যে সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ছাড়াও সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং আইনি দুর্বলতাগুলি মোকাবিলার জন্য সমন্বিত চেষ্টাও করছে।

বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজনে গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বেসরকারি সংস্থা, যুব প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশ নেবেন।

ঢাকাটাইমস/২৮নভেম্বর/আরকেএইচ/ইএস/কেএম

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাকা-১৪: এস এ খালেকের উত্তরাধিকার সাজুকেই বিএনপির নির্ভরযোগ্য প্রার্থী ভাবছেন স্থানীয়রা
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ডাকাতি হওয়া বিপুল পরিমাণ সৌদি রিয়ালসহ ৭ জন গ্রেপ্তার
ডেঙ্গুতে আরও ১জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৫৮
জুনে ১৩৫টি মোবাইল উদ্ধার করেছে ১২ এপিবিএন, মালিকদের কাছে হস্তান্তর
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা