ফেসবুক পেজ বিক্রির নামে প্রতারণা, চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার
অনেক অনুসারী আছে, কিনলে লাভবান হবেন, বিপুল আয়ের সুযোগ হবে- এমন প্রলোভনে ‘ফেসবুক পেজ’ বিক্রির নামে প্রতারণা করে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাত করছিল একটি চক্র। প্রতারক চক্রের মূলহোতা মোবারক হোসেনকে (২২) রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-২)। গ্রেপ্তার হওয়া মোবারক হোসেন ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থানার আব্দুল বারেকের ছেলে।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে র্যাবের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. ফজলুল হক এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইনে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের পরিমান বেড়েছে। এক ধরনের প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ ফেসবুক পেইজ বেচাকেনা করার মাধ্যমে প্রতারণা করে বিভিন্ন কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্র প্রথমে লোভনীয় অফার দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইউটিউব চ্যানেলে বেশি পরিমান সাবস্ক্রাইব আছে এমন ফেসবুক পেইজ বিক্রি হবে বলে বিজ্ঞাপন দেয়। পরবর্তীতে তাদের পেইজ যারা ক্রয় করে তাদেরকে বিভিন্ন কৌশলে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা টাকার চাঁদা দাবি করে। এমন একটি ঘটনার মূল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব-২ ছায়াতদন্ত এবং গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার র্যাবের কাছে একজন অভিযোগকারী থেকে জানা যায় গত অক্টোবর মাসে তার ছেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ‘নিকোটিনের জীবন’ এর অ্যাডমিন মোবারক হোসেন থেকে পেইজটি কেনেন। পরে গত ৭/৮ মাস আগে তার সেই পেইজটি হ্যাক হয়ে যায়। পেইজটি হ্যাক হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী ছেলের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে তিন দফায় মোট ১০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় মোবারক হোসেন।
উক্ত অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে র্যাব-২ ঘটনার পেছনে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে র্যাব-২ এর আভিযানিক দল ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতা মোবারককে হাতে নাতে গ্রেপ্তার করে। তিনি গ্রেপ্তারের আগ মুহূর্তে ভুক্তভোগীর কাছে দাবিকৃত পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নিচ্ছিলেন।
প্রাথমিকঅনুসন্ধান ও গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোবারক দীর্ঘদিন যাবৎ মানুষের কাছ থেকে ভুয়া ফেইসবুক পেইজ বেচাকেনা করে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাত করে।
মোবারক হাইস্কুল পড়ুয়া ছাত্র হয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইউটিউব দেখে প্রতারণার কৌশল আয়ত্ত করে। পরবর্তীতে সে চার থেকে পাঁচজনের একটি প্রতারক চক্র গড়ে তোলে যাদের কাজ হলো বিভিন্ন বয়সের তরুণদেরকে তাদের পেইজে লোভনীয় অফার দিয়ে আকৃষ্ট করা। পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে ফেইসবুক থেকে প্রচুর পরিমাণ টাকা উপার্জন করা যায় এর প্রলোভন দেখায়। এরপর নতুন নতুন ফেইসবুক চালনা কারীদের বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে তাদের ফেইসবুক পেইজ কেনার জন্য লোভ দেখায়।
পরবর্তীতে ফেসবুক পেইজ বিক্রির পরে পাসওয়ার্ড হ্যাক করে আবার বিক্রি হওয়া একই ফেসবুক পেইজ নিজেদের করে নেয় এবং বিভিন্ন কলা কৌশল এবং হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। গ্রেপ্তার আসামির দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানায় র্যাব। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানানো হয়।
(ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/কেআর/কেএম)