আসতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা, শুক্রবার দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু

মো. রাজীব হোসেন, টঙ্গী-পূবাইল (গাজীপুর)
| আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৫৬ | প্রকাশিত : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪৭

লাখ লাখ মুসল্লির পদভারে পরিপূর্ণ বিশ্ব ইজতেমার ময়দান। বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে লাখো মুসল্লি জমায়েত হওয়ায় কারণে বৃহস্পতিবার সাথীদের উদ্দেশে আমলী বয়ান শুরু হয় বাদ যোহর ভারতের মাওলানা ফারুক বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা. আশরাফ আলী ও বাদ আসর মাওলানা, হারুন কুরাইশী (পাকিস্তান) বাংলায় অনুবাদ করবেন মাওলানা মনির। বাদ মাগরব ভারতের মাওলানা জমসেদ বাংলায় অনুবাদ করবেন মাওলানা আব্দুল্লাহ।

তবে আগামীকাল শুক্রবার বাদ ফজর মাওলানা উসমান (পাকিস্তানী) আনুষ্ঠানিক আম বয়ানের মধ্য দিয়ে (সাদপন্থী) মূল পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

শুক্রবার ফজর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় পর্বের ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা।

বৃহস্পতিবারও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে দল বেঁধে মুসল্লিরা আসছেন ইজতেমা ময়দানে। বাসে, ট্রাকে, খোলা ভ্যানে মুসল্লি আসতে শুরু করে

বৃহস্পতিবার সকালে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন খিত্তা অনুযায়ী ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেওয়া মুসল্লিরা তাদের আমীরের দেওয়া দীনের বয়ান শুনছেন।

তবে, আগামীকাল শুক্রবার বাদ ফজর মাওলানা উসমান হকের আনুষ্ঠানিক আম বয়ানের মধ্য দিয়ে (সাদপন্থী) মূল পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা ওসমানের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন জিয়া বিন কাশিম।

সকাল ১০টায় তালিম করেন মাওলানা ইউসুফ। তার তালিমের বাংলায় অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। জুমার নামাজ শেষে শীর্ষ মুরব্বি ওয়াসিফুল ইসলাম বয়ান করেন। বাদ আসর ভারতের মাওলানা সাঈদ বিন সাদের দেওয়া বয়ানের অনুবাদ করবেন মুফতি আজিমুদ্দিন ও বাদ মাগরিব মাওলানা ইউসুফ বিন সাদের বয়ানের তরজমা করবেন মুফতি বিন কাশিম। ইজতেমায় তাদের দলের সদস্যদের কার কী কাজ, কে কী দায়িত্ব পালন করবে তা ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার রাত থেকেই দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা জামাতবদ্ধ হয়ে দলে দলে ইজতেমা মাঠের নির্ধারিত স্থানে (খিত্তায়) প্রয়োজনীয় মালামাল ও ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করছেন। তিনদিন ব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।

জুম্মার নামাজে ইজতেমা ময়দানে প্রায় লাখ মুসল্লি এক জামাতে শরিক হয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রাজধানী ও গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি এ বৃহৎ জুম্মার নামাজে শরিক হবেন।

ইজতেমা মাঠের মুরুব্বিরা জানান, তাবলীগ জামাতের উদ্যোগে প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। মাঠের সব কাজ করা হচ্ছে পরামর্শের মাধ্যমে। এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলীগ জামাতের অনুসারী মুসলমানরা অংশ নেন। তারা এখানে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতী কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেওয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।

বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ ছায়েন বলেন, বুধবার থেকে দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা ময়দানে এসে ইজতেমায় যোগ দেওয়া শুরু করেছেন। বিদেশিরা ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে তাদের জন্য উন্নত তাবুতে এসে অবস্থান নিচ্ছেন। তাদের পাশাপাশি একই সময়ে দেশের প্রায় সব জেলা থেকে লাখো মুসল্লি এসে ময়দানে নির্ধারিত খিত্তায় হাজির হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, আল্লাহর অশেষ রহমতে সভাপতিহীন বিশ্ব ইজতেমার এতো বড় আয়োজন প্রতিবছরই অত্যন্ত সু-শৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করা হয়। এজন্য আমাদের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পুরো ইজতেমা ময়দানকে মুরুব্বীদের পরামর্শে সাজানো হয়। ময়দানে জেলাওয়ারি মুসল্লিদের অবস্থান, রান্না-বান্না করার স্থান, টয়লেট, অজুখানা, গোসলখানা সবই সুর্নিদিষ্ট করা থাকে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে খাবারে ভেজাল, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি, অনিয়মের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে

এদিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকছে প্রায় ১০ হাজার পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। কয়েকটি স্তরের এ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইজতেমা ঢেকে রাখা হয়েছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন ঘটতে না পারে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।

বিদেশি মেহমান:

বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৯০ দেশের প্রায় পাঁচ হাজার বিদেশি মেহমান ময়দানের উত্তর-পশ্চিম দিকে তাদের জন্য নির্ধারিত নিবাসে অবস্থান নিয়েছেন।

ভাসমান সেতু নির্মাণ:

অন্য জেলার মুসল্লিরা যেন সহজে নদী পাড় হয়ে ময়দানে প্রবেশ করতে পারে ময়দানের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদীর উপর সেনাবাহিনী পাঁচটি ভাসমান সেতু নির্মাণ করেছে।

ফ্রি চিকিৎসা সেবা:

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এখান থেকে ২৪ ঘণ্টাই ওষুধ ও সেবা পাওয়া যাবে। হাসপাতালের সাতটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল এখানে মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান করছেন।’

(ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :