বিধবাকে অনুদান পাইয়ে দিতে ঘুষ নেয়ায় অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

দিনাজপুরের বিরামপুরে এক অসুস্থ বিধবা নারীকে সরকার থেকে ৫০ হাজার টাকা চিকিৎসা অনুদানের টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রায় ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে এক ছাত্রলীগ নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতার নাম তানভীর রাজন। তিনি বিরামপুর উপজেলার জোতবানি ইউনিয়নের কসবাসাগরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং জোতবানি ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়ালেখা করেন।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী আঞ্জুয়ারা খাতুন উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ফুলডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। তিনি বিধবা। তিনি বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাপড় ফেরি করেন। দীর্ঘদিন ধরে মেরুদণ্ডের সমস্যা ও কিডনি রোগে ভুগছেন তিনি।
আঞ্জুয়ারা অভিযোগ করে জানান, পাঁচ মাস আগে ছাত্রলীগ নেতা তানভীর রাজন আশ্রয়ণ প্রকল্পে তার কাছে আসেন। সেখানে এক দোকানদারের কাছে আঞ্জুয়ারার খোঁজ নিয়ে পরিচয় হয় রাজন।
স্থানীয় এমপির কাছ থেকে চিকিৎসার অনুদানের ৫০ হাজার টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেন আঞ্জুয়ারাকে। এ জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে আঞ্জুয়ারার কাছ থেকে এবং কাটলা বাজারে তার এক মহাজন কাপড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে ১৪ হাজার ৬০০ টাকা নেয়।
আঞ্জুয়ারা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস পর তানভীর রাজনকে চিকিৎসা অনুদানের টাকার কথা বললে তিনি বিভিন্নভাবে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে আমার টাকা তার কাছে ফেরত চাইলে তিনি আমাকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেন। আমি টাকার জন্যে তার বাড়িতে গিয়েছি। টাকার কথা বললে তার মা-বাবাও আমার সঙ্গে অনেক দুর্ব্যবহার করেন।
ভুক্তভোগী নারীর এই টাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা তানভীর রাজন।
রাজন জানিয়েছেন, ‘আমি ওই নারীর কাছ থেকে কোনো ঘুষ গ্রহণ করিনি। তবে দুই মাস আগে আমি তার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিলাম। গ্রামের কিছু মানুষ ওই নারীকে প্রভাবিত করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।'
এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলার ২ নম্বর কাটলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুস আলী মন্ডল বলেন, 'আমার জানামতে অনুদানের টাকা পেতে কোনো ঘুষের প্রয়োজন হয় না। শুনেছি, অনুদান দেয়ার নামে অসহায় মহিলার কাছে টাকা নিয়েছে। এই টাকা নেওয়ার কাজটি ভালো করেনি ছাত্র নেতা রাজন।'
এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক জানান, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ওই বিধবা নারীর কাছ থেকে রাজন টাকা নিয়েছে, এমন অভিযোগ পেয়েছি। এ নিয়ে বুধবার সকালে উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে জরুরি সভা হয়েছে। সভায় এ বিষয়ে গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি। সেই সাথে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে অভিযুক্ত ছাত্র নেতা তানভীর রাজনকে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
(ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/এলএ)

মন্তব্য করুন