‘বিএডিসির সেচ প্রকল্প’ ১০ হেক্টর কৃষিজমিতে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি

আশিকুর রহমান, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)
 | প্রকাশিত : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৩৫

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয় করপোরেশন (বিএডিসি) এর সেচ প্রকল্পের আওতায় আসছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর ইউনিয়নের আষাড়িয়াবাড়ী নামাপাড়া এলাকার ১০ হেক্টর কৃষিজমি। সহজলভ্য ও স্বল্প ব্যয়ের এই সেচ পদ্ধতি ব্যবহারে ওই এলাকার কৃষকদের ফসল উৎপাদনে নতুন মাইল ফলকের সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তির এই সেচ প্রকল্প চালু হলে বাৎসরিক ফসল উৎপাদনে সেচ খরচের ব্যয় অনেকটাই হ্রাস পাবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর ইউনিয়নের আষাড়িয়াবাড়ী নামাপাড়া চরের শতশত বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে তিন ফসলি ও বোরো ধানের জমি। এসব জমি চাষাবাদে কৃষকদের প্রতিবছর মোটা অংকের মূলধন ব্যয় হতো ডিজেল চালিত সেচ খরচে। বিভিন্ন সময় ডিজেল চালিত ওই ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পানি শূন্য হয়ে যেত ফসলের মাঠ। চরের তিন ফসলি জমিগুলোতে সেচ দিতে জ্বালানি তেলের পাশাপাশি বাৎসরিক ভাড়া দিতে হতো সেচ মেশিনের মালিকদের। সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে আড়াইহাজার টাকা লেগে যেত সেচ খরচে। তবে কৃষকদের এই দুর্দশা যেন বদলে যাচ্ছে এক ঝলকেই। গেল বছরের মাঝামাঝি ওই এলাকার স্থানীয় কিছু সমাজসেবী লোকজনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি কমিটি করা হয়। কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয় করপোরেশন (বিএডিসি) গাজীপুর জেলা কার্যালয় থেকে একটি সেচ প্রকল্প বরাদ্দ করা হয়। বিদ্যুৎ চালিত আধুনিক এই সেচ প্রকল্প স্থাপনের জন্য উপজেলার আষাড়িয়াবাড়ী নামাপাড়া এলাকায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হয়। এরপর চলতি বছরে শুরুতেই সেচ প্রকল্প স্থাপনের কাজও শুরু হয় পুরোদমে। তুরাগ নদী থেকে আধুনিক বিদ্যুৎ চালিত মোটরের সাহায্যে মাটির ভূগর্ভস্থল দিয়ে পানি পৌঁছে যাবে কৃষি জমিতে। প্রথম বছরেই এই প্রকল্পটির আওতায় আসছে প্রায় ছয় হেক্টর তিন ফসলি এ বোরো ধানের জমি। পরবর্তী বছরে বাকি চার হেক্টর জমি এ সেচ প্রকল্পের আওতায় আসবে বলে জানান বিএডিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ও কমিটির সদস্যরা।

ওই এলাকার কৃষক সবুজ মিয়া, আবুল কাশেম, ধিরিশ চন্দ্র সরকারসহ বেশকিছু কৃষকরা জানান, প্রতি বছর শত বিঘা জমিতে শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন সবজিসহ বোরো ধানের আবাদ করা হয়। এই চরের জমিগুলো সমতল না থাকায় অন্যান্য বছরগুলোতে জমিতে সেচ দিতে তীব্র কষ্ট করতে হয়েছে এবং সেচ খরচও ব্যয়বহুল হয়েছে। কিন্তু সরকারের দেয়া এই সেচ প্রকল্প চালু হলে আমাদের সেই কষ্টের দিন ফুরোবে। এর ফলে এক বিঘা জমিতে আগে সেচ খরচ হতো দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আর এখন হবে এক হাজার টাকায়। সাথে সময় ও শ্রম দুটোই কমবে। ফসল উৎপাদনেও আমরা অনেকটা এগিয়ে যাব।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয় করপোরেশন (বিএডিসি) গাজীপুর জেলার প্রকৌশলী মো. জুয়েল আহম্মেদ জানান, সরকার কৃষিখাতে গুরুত্ব দিয়েছে। এই সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে এই অঞ্চলের কৃষকদের ভাগ্য বদলের সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে। সেচ প্রকল্পটি চালু হলে কৃষকদের চাষাবাদে পানির কষ্ট আর থাকবেনা। পাশাপাশি ঝামেলাহীন ভাবে অল্প খরচে তারা অধিক ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :