সড়কপথে আমাদের অনিয়ম আর উত্তরণের কিছু কথা

সাইদুর রহমান শাহিদ
 | প্রকাশিত : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:০৩

দৈনন্দিন জীবনে নানাবিধ প্রয়োজনে আমাদেরকে একস্থান থেকে অন্যত্র যাতায়াত করতে হয়। আর সেই প্রয়োজন মেটাতে আমরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করি সড়কপথ। পায়ে হাঁটা থেকে শুরু করে ভারি যানবাহনে আমরা যাতায়াত করে থাকি। কিন্তু আমরা সড়কপথে চলাচলে অনেকটাই উদাসীন। নিজের খেয়ালখুশি মতো চলাচল করি এবং আমাদের ব্যবহৃত যানবাহনও ঠিক সেভাবেই চালাই।

আমরা পথচারী হিসেবে অনেকেই সড়কপথে চলাচলে সাধারণ নিয়মকানুনগুলো মেনে চলি না। ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে অনীহা, সড়কের উল্টো দিকে চলাচল করা, অসতর্কভাবে রাস্তা পারাপার, পথিমধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার। এসব ছাড়াও বহু অনিয়ম প্রতিনিয়তই আমাদের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে। একইভাবে যাত্রী হিসেবেও আমরা বেশ অসচেতন।

বিশেষত হালকা যানবাহনে ভ্রমণকালে আমরা যত্রতত্র বাহন থামাতে চালকদের এক রকম বাধ্য করে ফেলি। যার ফলে চালক যত্রতত্রই তাদের বাহন থামিয়ে আমাদেরকে বাহন থেকে নামান অথবা তুলে নেন। আমাদের এই অনিয়ম অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার ওইসব যানবাহন থেকে আমরা কখনো কখনো উল্টোদিক থেকে নামি অথবা বাহনে উঠি। যার ফলে আমরাই অনেকসময় দুর্ঘটনার শিকার হই। অনুরূপভাবে আমরা চালক হিসেবেও বেশ অসচেতন।

ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে গাড়ি চালানো, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, গাড়ি চালনায় দক্ষতার অভাব থাকা সত্ত্বেও গাড়ি চালানো,মাদকাসক্ত হয়ে গাড়ি চালানো, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে কিংবা সড়কে উচ্চগতিতে গাড়ি চালানো এসব ছাড়াও বহু অনিয়ম আমাদের দ্বারা সংঘটিত হয়। আর এসব অনিয়ম আর অসঙ্গতির ফলাফল ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি কিংবা পঙ্গুত্ব। আমাদের এসব অসচেতনতার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়ে ফেলছে কারো পিতা, কারো মাতা, কারো ভাই, কারো বোন, কারো সন্তান কিংবা নিকটজন।

কাজেই সড়কপথ নিরাপদ করতে আমাদের সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। সড়কপথে চলাচলে আমাদেরকে পথচারী, যাত্রী এবং চালক হিসেবেও সচেতন হতে হবে। সড়কপথের সাধারণ নিয়মাবলী মেনে চলাচল করতে হবে, সড়ক পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে হবে, সড়কে চলাচল করা অবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।সড়কে সর্বদাই ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে। ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন থেকে বিরত থাকতে হবে। বৈধ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গাড়ির কাগজপত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। মোটরবাইকে আরোহণ করলে সুরক্ষা সামগ্রী পরিধান করতে হবে।

সড়কপথে গাড়ি চালানোর সময় মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। মাদকাসক্ত হয়ে কিংবা চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে। নিয়মিত গাড়ির যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করে সেগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। সর্বোপরি আমাদের সচেতনতামূলক পদক্ষেপ সড়ক নিরাপদ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। আসুন সচেতন হই, সড়ক নিরাপদ রাখি।

লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের শিক্ষার্থী

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :