লাউয়াছড়ায় ট্রেন থামিয়ে উদ্ধার হরিণ জবাইয়ের অভিযোগ

ঢাকাগামী কালনী ট্রেন থেকে উদ্ধার করা একটি মায়া হরিণ জবাই করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ট্রেনের আঘাতে আহত হওয়ার পর চালক ট্রেন ৫ মিনিট দাঁড়িয়ে রেখে এটি জবাই করার সুযোগ করে দেন। পরে বস্তায় ভরে হরিণটি ট্রেনে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ট্রেন শ্রীমঙ্গল পৌঁছলে রেল পুলিশ জবাই করা হরিণটি উদ্ধার করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ট্রেনের একাধিক যাত্রী। ঢাকাগামী কালনী ট্রেন থেকে বুধবার সকাল ১০টায় এই হরিণের মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানা পুলিশ।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, ধারণা করা হচ্ছে- চলন্ত ট্রেনের আঘাতে হরিণটি আহত হয় এবং পরে হরিণটিকে জবাই করা হয়। আমরা ময়নাতদন্তের মাধ্যমে জানতে পেরেছি জবাই করার কারণেই হরিণটির মৃত্যু হয়েছে। গায়ে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও তার কারণে মৃত্যু হয়নি। জবাই না করলে এ আঘাতে সুস্থ হয়ে যেত হরিণটি।
এই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন সন্তোষ দাস জানান, দেখলাম একটা হরিণ আহত হয়েছে- পরে একে জবাই করা হয়েছে। আমি মৃত অবস্থায় হরিণটিকে দেখেছি। অনেকেই এ ঘটনা ভিডিও করেছে। হরিণটি আনার পর ট্রেন ছেড়ে দেয়।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার বেশ কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা গেছে, একজনের হাতে জবাই করার অস্ত্র। তবে তিনি চালক নিজেই কিনা- তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, সেদিন ট্রেনটি স্টেশনে দেরি করে পৌঁছায়। ভানুগাছ স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার তার রেকর্ড বুক থেকে জানান, ভানুগাছ থেকে ৮.২৮ এ ট্রেনটি ছেড়ে আসে এবং ৮.৫৪ তে শ্রীমঙ্গল স্টেশনে পৌঁছায়। অন্যান্য সময় ২০ মিনিট লাগলেও এই দিন লাগে ২৬ মিনিট লাগে।
এদিকে বনবিভাগ সূত্রেও জানা যায়, ট্রেনের গায়ে লেগে হরিণটি আহত হওয়ায় সেটিকে জবাই করে ট্রেনে তোলা হয়।
বনবিভাগের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের শতভাগ ধারণা যে চালক ট্রেন থামিয়েছেন এবং জবাই করে তা ট্রেনে তুলেছেন। কারণ ট্রেন না থামালে তা কোনভাবেই ট্রেনে তোলা সম্ভব নয়। এই মায়া হরিণ লাউয়াছড়া বনেই সাধারণত দেখা যায় এবং অতীতেও ট্রেনের ধাক্কায় হরিণ আহত বা মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কর্ণ চন্দ্র মল্লিক বলেন, আমরা ময়নাতদন্ত করে বুঝতে পেরেছি প্রাণীটিকে ধারলো কোন জিনিস দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, আমার ধারণা ট্রেনের আঘাতে আহত হওয়ার পর তা ট্রেনে তোলা হয়। কীভাবে তোলা হয়েছে- তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।
(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/এলএ)

মন্তব্য করুন