কুড়িগ্রামে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১১ ইউপি সদস্যের অনাস্থা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ মার্চ ২০২৩, ১৭:০৬

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের আবেদন দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের ১১ ইউপি সদস্য (মেম্বাররা)। চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী সরকারের বিরুদ্ধে এই অনাস্থা আনেন।

শুক্রবার বিকাল অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা। এর আগে গত ২২ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাবের আবেদন করেন ওই ইউনিয়নের ১১ ইউপি সদস্য।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দলদলিয়া ইউনিয়নের নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বিতরণের জন্য ৩৩ জনের নাম চূড়ান্ত করে তালিকা তৈরির সময় চেয়ারম্যান জনপ্রতি ১৫-২০ হাজার করে টাকা নেন। যারা আগে টাকা দেন নাই তাদের টাকা উঠানোর দিন জোরপূর্বক টাকা নেন চেয়ারম্যানের লোকজন। বিষয়টি যেন কাউকে না জানানো হয়, এ জন্য হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়াও ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি.আর) কর্মসূচির আওতায় নন সোলার দ্বিতীয় পর্যায়ে দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সংস্কার প্রকল্পের কোন কাজ না করেই ২ লাখ ১০ হাজার টাকা আত্মসাত করেন চেয়ারম্যান। এদিকে হতদরিদ্রের জন্য ইজিপিপি প্লাস প্রকল্পের পূর্বে জব কার্ডধারী উপকারভোগী ৩৫৯ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৯ জনের নাম কর্তন করার নিয়ম থাকলে ইউপি চেয়ারম্যান স্বেচ্চাচারীভাবে ইউপি সদস্যদের সঙ্গে কথা না বলে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে প্রায় ৯০টি নাম কর্তন করেন। অতিরিক্ত কর্তন করা নামগুলো চেয়ারম্যানের ৯নং ওয়ার্ডের নিজের লোকজন। তাদের কাছে ৩ হাজার করে টাকা নিয়ে নামগুলো প্রতিস্থাপন করেন চেয়ারম্যান। এদিকে মসজিদ ও মাদরাসার টয়লেট নির্মাণের টাকাও আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেক্টর থেকে আয়ের টাকা সচিবকে নিয়ে যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। পরিষদের আয় নেই দেখিয়ে ইউপি সদস্যদের সম্মানীর ভাতাও আজ পর্যন্ত প্রদান করা হয়নি বলে জানা গেছে। এরকম নানান অভিযোগের পাহাড় লিয়াকত আলী সরকারের বিরুদ্ধে।

উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের ২ ও ৩ নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) নুরুজ্জামান ও সইবর বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব যেকোনো মিটিং এ বসে প্রথম বক্তব্যে বলেন, বাড়িতে সরিষার তেল দেওয়া লাঠি আছে। এভাবেই আমাদের প্রায় হুমকি প্রদান করেন চেয়ারম্যান। লাঠি দিয়ে নাকি চেয়ারম্যানি করবেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদে যত কাজ করেন তার সব মনগড়া। আমাদের কাউকে তিনি মানেন না। আমরা ১১ ইউপি সদস্য কোন উপায় না পেয়ে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা যা হবে আমরা মাথা পেতে মেনে নেব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সুপারভাইজার ছিলেন। চাকরির সময়ে প্রায় সাড়ে তিন বছর দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ড ছিলেন। সারাজীবন জাসদের রাজনীতি করে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে চেয়ারম্যান হন। আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদও তার নেই।

এ বিষয়ে দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী সরকার বলেন, তারা অভিযোগ করতেই পারে। দেখা যাক কি হয়।

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :