গাজীপুর হবে স্মার্ট নগর, মাস্টারপ্ল্যানের কাজ ৫৫ শতাংশ সম্পন্ন: মেয়র কিরণ

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৩, ২০:৪৪ | প্রকাশিত : ২৭ মার্চ ২০২৩, ২০:০৭

গাজীপুর বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ সিটি করপোরেশন। এই সিটি করপোরেশনকে একটি সুন্দর ও স্মার্ট নগর হিসেবে গড়ে তুলতে নেওয়া হয়েছে মাস্টারপ্ল্যান। এর মধ্যে রয়েছে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তৈরি ও এর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ৮টি ট্রাক স্ট্যান্ড তৈরি ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ। এই মাস্টারপ্ল্যানের কাজ ৫৫ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মো. আসাদুর রহমান কিরণ।

তিনি বলেছেন, এই প্ল্যান বাস্তবায়ন হলে গাজীপুর সিটি একটি সুন্দর ও স্মার্ট শহর হবে।

সোমবার ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) ক্যাম্পাসের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার অডিটরিয়ামে নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্প স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন এবং ফোকাস গ্রুপ ডিসকাসন ওয়ার্কশপের প্রথম পর্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমাননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের টিম লিডার ও ডুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক, প্রকল্প পরিচিতি উপস্থাপন করেন ডেপুটি টিম লিডার ও ডুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামাউন আল নূর।

অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র অ্যাড. আয়শা আক্তার, প্রধান প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আকবর হোসেন, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান কাজল, জোন-৫ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম, কাউন্সিলর শাহজাহান মিয়া, জাবেদ আলী জবে ও সিটির স্টেক হোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুর সিটির মাস্টার প্ল্যানের কাজ চলছে জানিয়ে মেয়র বলেন, এজন্য ইতোপূর্বে এক্সেস এশিয়া নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু তারা চুক্তি মোতাবেক কাজ করতে না পরায় গত বছর জুলাইয়ের ২৮ তারিখ ঢাকা প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট)-এর সঙ্গে এ প্রকল্পের রিভাইজ চুক্তি হয়। এ পর্যন্ত মাস্টার প্ল্যানের কাজ প্রায় ৫৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ইনসেপশন রিপোর্ট প্রণয়ন, বেজ পার্ক স্থাপন, মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ এবং ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুতকরণ, ফিজিক্যাল ফিচার ম্যাপ প্রণয়ণ ও তথ্য সংগ্রহ ১০০ভাগ, আর্থ সামাজিক, কৃষি, ট্যুরিজম, ইন্ডাস্ট্রি, ট্রাফিক, পরিবশে ও ভূমি ব্যবহার জরিপ ৯০ শতাংশ, সার্ভেয়ার প্রজেক্ট কাজ চলমান, স্ট্রাকচার প্লান প্রস্তুতি চলমান, চূড়ান্ত মাস্টারপ্ল্যানের কাজ চলমান রয়েছে। সব মিলিয়ে গাজীপুর সিটির মাস্টার প্ল্যানের প্রায় ৫৫ শতাংশ কার্যক্রম সমাপ্ত করা সম্ভব হয়েছে।

মেয়র গাজীপুর নগর সুন্দর করার জন্য সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ১০০ বিঘা জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশের মধ্যে গাজীপুর একটি সুন্দর পরিবেশের বাসযোগ্য নগরী উপহার দিতে পারব।

তিনি আরও বলেন, সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর সিটিকে ৩৮’শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প উপহার দিয়েছেন। এ প্রকল্পগুলোর মধ্য জয়দেবপুর থেকে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার ফ্লাইওভার পর্যন্ত (ধীরাশ্রম) ৬০ ফিট অধিগ্রহণ, গাছা বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে পদ্মা সেতু প্রত্যাশা এলাকা পর্যন্ত ৬০ ফিট রাস্তার জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

‘এছাড়া সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৮টি ট্রাক স্ট্যান্ডের জন্য প্রধানমন্ত্রী ২০০ বিঘা জমি বরাদ্ধ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে ৬টি ট্রাক স্ট্যান্ড করার জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছি। বাকি দুইটি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম গাজীপুর সিটি একটি সুন্দর শহর হবে বলে বিশ্বাস করি’—যোগ করেন মেয়র।

আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনই প্রথম স্মার্ট নগরী করার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সমস্ত কার্যক্রম (একাউন্টস, ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, রিক্সা লাইসেন্স) অটোমোশনে নিয়ে আসছি। এ কাজগুলো চলমান রয়েছে। এ কর্যক্রমগুলো বাস্তবায়িত হলে গাজীপুর সিটি করপোরেশন একটি স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ লাভ করবে।

বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তাকে মেয়রের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জানিয়ে কিরণ বলেন, প্রায় শূন্য হাতে দায়িত্ব নিয়ে সিটি করপোরেশনের রিজার্ভে (রাজস্ব ফান্ড) প্রায় ১২৩ কোটি টাকা রয়েছে। যেটা বাংলাদেশের অনেক সিটি করপোরেশনে রিজার্ভ নেই। সিটি কর্পোরেশনের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় সুন্দর সেবামূলক ও স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছি। এ নগরকে কীভাবে সুন্দর করা যায় সে বিষয়ে আপানারা (উপস্থিতি) মতামত দেবেন। আপনাদের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আজকের এই আয়োজন।

ওয়ার্কশপে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্প স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন এবং ফোকাস গ্রুপ ডিসকাসন ওয়ার্কশপের একটি পর্বে মাস্টার প্ল্যানের কাজকে পরিপূর্ণ করতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের মতামত নেয়া হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৭মার্চ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :