ওমরা পালনে বাস দুর্ঘটনায় দেবীদ্বারের গিয়াসের মৃত্যু

দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৭:৩২
অ- অ+

১৪ বছর বয়সী সাদিয়া চিৎকার করে বলে আমার বাবার চেহারা আমার মনে নেই। আমি আমার বাবার লাশ ফিরে পেতে চাই। ছেলে রহমানও বাবার লাশ দেশে ফিরে পেতে সরকারের সহযোগিতা চায়।

৭ বছর আগে শেষবার দেশে এসেছিলেন গিয়াস উদ্দিন। কথা দিয়েছিলেন ওমরা শেষে বাড়ি ফিরবেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ করবেন। কথা অনুযায়ী সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে রেখেছিলেন, আগামী রবিবার তার দেশে ফেরার কথা। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেছে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায়।

ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে পবিত্র নগরী মক্কায় যাওয়ার পথে সৌদি আরবের আসির অঞ্চলের আবহা জেলায় ৪৭ যাত্রী নিয়ে একটি বাস ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়। ওই দুর্ঘটনায় ২৪ (এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত তথ্য) সহযাত্রীর সাথে মৃত্যুবরণ করেছেন গিয়াসও।

নিহত গিয়াস উদ্দিন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার গ্রামের মীর বাড়ির আবদুল হামিদ মীরের ছেলে। ২০০১ সালে সংসারের সুখের জন্য সৌদি আরব গিয়েছিলেন। বৈবাহিক জীবনে সে ১ ছেলে, ২ মেয়ের বাবা। বড় ছেলে মো. আবদুর রহমান মীর (১৬) স্থানীয় রাজামেহার উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে এবং মেয়ে সাদিয়া আক্তার মীর (১৪) ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে আমেনা (৭)। আমেনা মায়ের পেটে থাকতেই বাবা প্রবাসে। তার বাবাকে চোখে কখনো দেখেনি।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে রাজামেহার গ্রামে মীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকের মাতম। নিহত গিয়াস উদ্দিনে স্ত্রী রাবিয়া বেগম (৩৬) চিৎকার-আহাজারি করে বলছেন- আমার স্বামীর মরদেহ দেখতে চাই। আমার স্বামী এবার দেশে এসে সবাইকে নিয়ে ঈদ করবে বলেছিল। সে আশার আর পুরন হল না।

রাবিয়া আরও বলেন, ২১ বছর প্রবাস জীবনে কিছুই করতে পারেনি। সর্বশেষ ৭ বছর আগে প্রবাসে যায়। এক টাকা ব্যাংক ব্যালেন্সও রেখে যায়নি। ভিসা সমস্যার কারনে দীর্ঘদিন পলাতক থেকে কাজ করতে হয়েছে। ৩/৪ দিন হয় আকামা পেয়েছে, আকামা পেয়েই ওমরা হজ পালন করতে যায়। ওমরা শেষে দেশে ফিরে সবাইকে নিয়ে ঈদ করার কথা ছিল।

নিহত গিয়াস উদ্দিনের পিতা আব্দুল হামিদ মীর পুত্র শোকে একটু পর পর মুর্ছা যান। তিনি বুক চাপড়ে চিৎকার করে বলেন, আমার ২ পুত্র ২ মেয়ের মধ্যে গত বছর বড় ছেলে জসীম উদ্দিন প্রবাস থেকে ফিরে এসে দুরারোগ্য ক্যান্সারে মারা গেল এবার ছোট ছেলে গিয়াসও সড়ক দুঘটনায় মারা গেল। এতিম নাতি-নাতনিদের কে দেখবে? কে তাদের মানুষ করবে?

নিহতের শশুর খায়রুল আলম বলেন, আমার ২ মেয়েই অল্প বয়সে বিধবা হল, বড় মেয়ের জামাই পুলিশে চাকরি করত ৮ মাস আগে মারা যায়, আজ মারা গেল ছোট মেয়ের জামাই। আমি কি করব ভেবে পাচ্ছি না।

(ঢাকাটাইমস/২৯মার্চ/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২৬ ফিলিস্তিনি নিহত
গরমে দিনে কতটুকু পানি পান করলে শরীর সুস্থ থাকবে
দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ.লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো: জামায়াত আমির
জামালপুরে মাদ্রাসায় ছাত্রী ভর্তিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা