চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপদাহে ঝরে পড়ছে আমের গুটি

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:৪৬
অ- অ+

দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। তীব্র গরম ও তাপদাহে অতিষ্ঠ ও স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত রবিবার থেকে টানা ১২ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে চুয়াডাঙ্গা জেলায়।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গায় প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। প্রতিদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। এ জেলায় টানা ১২ দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। তার সাথে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে একটানা ৯ দিন ধরে। তাপপ্রবাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। এ জেলায় চলমান তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে অতীতের রেকর্ড ভাঙতে পারে। এবছর বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মাসে কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। মার্চে মাত্র ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এপ্রিলে এখন পর্যন্ত কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। আপাতত কোন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও নেই।

তীব্র তাপপ্রবাহ ও দীর্ঘদিন বৃষ্টির অভাবে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে প্রচুর মকুল আসে। সেই তুলনায় গুটিও এসেছে প্রচুর, কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ঝরে যাচ্ছে এসব গুটি। আম বাগানে গাছের নিচে গেলে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য গুটি ঝরে পড়ে আছে। কোনোভাবে রোধ করতে পারছেন না আমচাষিরা।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, আগের বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ হাজার ১৯১ হেক্টর জমিতে এবং আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭৪ হেক্টর বেশি আবাদ হয়েছে। এসকল জমিতে আম উৎপাদন হবে ৩৪ হাজার ৫১০ মেট্রিকটন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ হাটখোলা বাজারের আমচাষি দোয়াল্লিন মোল্লা বলেন, এই বছর কোনো বৃষ্টি নেই। বৃষ্টি না হওয়ায় দিনদিন তাপমাত্রা বাড়ছে। গরমের কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। আমগাছে সেচ দেয়া হচ্ছে, তারপরও গুটি টিকানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত আম নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হবে আমাদের।

আম ব্যবসায়ী শমসের আলী বলেন, আমের মুকুল দেখে তিনটা বাগান কিনেছিলাম। প্রচুর পরিমাণ গুটিও এসেছে এই বছর। কিন্তু প্রচণ্ড তাপদাহ ও বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। সেচ দিয়ে আমের গুটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি, কিন্তু এত গরমে তাও হচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, চলতি মৌসুমের শুরুতে আম গাছে প্রচুর পরিমাণ মুকুল ছিল। সেই তুলনায় গুটিও এসেছে অনেক। এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্রতাপদাহ। প্রচণ্ড রোদের উত্তাপ ও গরমের কারণে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। এখন পর্যন্ত আমে যে গুটি রয়েছে তা ধরে রাখতে পারলে বাগানমালিকরা ভালো ফলন পাবে। বৃষ্টিপাত হয়ে গেলে এসমস্যা থাকবে না। আমরা চাষি ও ব্যবসায়ীদের আম গাছে পানি সেচ দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করছি। যে কয়দিন বৃষ্টিপাত না হবে, সেই কদিন আমবাগানে খুব ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। সেচ দেয়ার পর আমগাছের গোড়ায় মাঞ্চিং করে দিতে হবে। প্রয়োজনে বড় বড় গর্ত করে পানি ধরে রাখতে হবে গাছের পাশে। তাতে কিছুটা রস ধরে থাকলে গুটি পড়া রোধ হবে। একই সঙ্গে বোরন, দস্তা ও জিংক জাতীয় যে ওষুধ পাওয়া যায়, তা গাছে প্রয়োগ করলে সমস্যা কিছুটা সমাধান হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাঙ্গাবালীতে অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস, জরিমানা
নাফ নদে দুই দফা আরাকান আর্মির গুলি, আহত ২ অপহৃত ৩ বাংলাদেশি
বাউফলে তাল গাছ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
আ.লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সুমন করিম গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা