তারাবি নামাজে গিয়ে একমাত্র সম্বল অটোরিকশা হারিয়ে কাঁদছেন ইভান

ইভান আলী! চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার মৃত শেখ আব্দুল্লাহর ছেলে ব্যাটারি চালিত অটো চালক। হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে চাকরির পাশাপাশি কিস্তি করে একটি অটোরিকশা কেনেন। কয়েক বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় চালিয়ে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস, রবিবার (১৬ এপ্রিল) রাতে পৌর এলাকার গাবতলা পাঠাগার মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে যান ইভান। তারাবির নামাজ শেষ করে বের হয়ে এসে দেখেন তার ব্যাটারি চালিত অটোটি চুরি হয়ে গেছে। বাকরুদ্ধ হয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন,কোথাও না পেয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন ইভান। এ ঘটনায় কাঁদছে তার পরিবারের সবাই। হতদরিদ্র অসহায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ইভান।

ইভান জানান, হরিমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬-৭ হাজার টাকায় একটি অস্থায়ীভাবে পিয়নের চাকরি করেন। সেই টাকাতে সংসার না চললে কিস্তি করে একটি অটোরিকশা ক্রয় করে রাতের বেলায় অটো চালিয়ে সংসারের খরচ যোগাতেন। সংসার ও অটো বাবদ প্রতি মাসে ১৮ হাজার টাকা খরচ তার। কিন্তু রাতে অটো নিয়ে বের হলেই অটোটি চুরি হয়ে যায়। ‘কে তার সংসার ও কিস্তি চালাবে। কে তার পরিবারের খরচ চালাবে।’ এসব বলতে বলতে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন ইভান।

এদিকে কাঁদতে কাঁদতে ইভানের স্ত্রী মাসকুরা খাতুন ও বড় বোন সেতারা খাতুন বলেন, আশা করি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন অটোটি উদ্ধার করে আমাদের জীবন বাঁচাবে। আর কয়েকদিন পরেই ঈদুল ফিতরের ঈদ। সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান তিনি।

অপরদিকে হরিমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুব আলীর দাবি, তারাবির নামাজ পড়তে গিয়ে যদি অটো হারিয়ে যায় তাহলে কোথায় গিয়ে নিরাপদ আমরা। এভাবে অটো হারানো অসহায় পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে যাবে। দ্রুত পুলিশ প্রশাসন অপরাধীদের ধরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সেই সঙ্গে এ পরিবারটির পাশে বিত্তবানসহ সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার কথাও বলেন।

সেই রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন অটো চালক ইভান। পুলিশের দাবি অটোটি উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭এপ্রিল/এআর)