ঘূর্ণিঝড় মোখা: সাতক্ষীরা উপকূলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, জেলায় ৮৮৭ সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত

সাতক্ষীরা, প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ মে ২০২৩, ১৭:৫৬| আপডেট : ১৩ মে ২০২৩, ১৮:২৫
অ- অ+

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকার নদ-নদীর স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভাঙন আতংকে রয়েছে উকুলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। তবে, ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার আগে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে চলছে তীব্র তাপদাহ। সেই সঙ্গে শ্যামনগর, আশাশুনিসহ ভাঙন কবলিত দ্বীপ ইউনিয়ন শ্যামনগরের গাবুরায় তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

শনিবার দুপুরের দিকে সাতক্ষীরা শহরে কিছুটা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও কিছুক্ষণ পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে, আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন ও গুমোট ভাব বিরাজ কছে। এছাড়া উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির খোলপেটুয়া, কপোতাক্ষ ও চুনা নদীসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে, ভাঙন আতংকে রয়েছেন উকুলীয় এলাকার লাখ লাখ মানুষ। বিশেষ করে শ্যামনগর উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ শ্যামনগরের গাবুরা এলাকার মানুষ রয়েছেন সবচেয়ে বেশী আতংকে। অত্যান্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে সেখানকার বেড়িবাঁধ। এছাড়া নেবুবুনিয়াসহ অনেক জায়গায় বেড়িবাঁধ তৈরিই হয়নি বহুদিন। সুতরাং বড় ধরনের কোন দূর্যোগ এলে তলিয়ে যাবে গ্রামটি। ‘দৃষ্টিনন্দন’ মিঠা পানি প্রকল্পের পাশে খুবই নিচু একটি বেঁড়ি বাঁধ রয়েছে। সেখানে বেশ কিছুদিন যাবত ভাঙন শুরু হয়েছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে ৫ হাজার জিওব্যাগ প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে ভাঙন রোধ করার জন্য। এলাকাটি তলিয়ে গেলে দৃষ্টিনন্দন পানির প্রকল্পটিতে লবনাক্ত পানি ঢুকে তা নষ্ট হয়ে যাবে। এতে পানি সংকট চরম আকার ধারন করবে।

ভাঙন কবলিত গাবুরা ইউনিয়ন পরিদর্শন শেষে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড পোল্ডার-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সালাউদ্দিন জানান, ভাঙন রোধের জন্য ২০ হাজার জিওব্যাগ প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এছাড়া গাবুরায় স্থায়ী বেড়িবাঁধের জন্য একটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। জেলেখালী এলাকা থেকে শুরু হয়েছে এই স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মান কার্যক্রম। ২০২৪ সালের জুন মাস নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা আবহায়ওয়া অফিসের ভাপরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা সাতক্ষীরার উপকুলে আঘাত আনার সম্ভাবনা খুবই কম। মোংলা বন্দর থেকে এটি ৭৮৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। এটি কক্সবাজার ও চট্টগুম সমুদ্র বন্দরের আঘাত আনার সম্ভাবনা বেশি। তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা উপকূলে বর্তমানে ৪ সতর্ক সংকেত চলছে। তবে, ঘূণিঝড় মোখার প্রভাবে সাতক্ষীরায় আজ সন্ধ্যা থেকে আগামী ২/১ দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্নসহ বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল বাসেত জানান, আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘‘মোখা’’কে সামনে রেখে সাতক্ষীরার উপক‚লীয় অঞ্চলে মোট ৮৮৭টি সাইক্লোন সেন্টার কাম আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এতে ৪ লাখ মানুষের আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া ৪১৬ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ নগদ টাকা ও ৫ হাজার সিপিপি সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া উপকুলীয় এলাকার মানুষকে সচেতন করার লক্ষে ও নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক টিমসহ সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে কাজ করছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩মে/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ভালুকায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ছাড়াই গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতদের দাফন-সৎকার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
শহীদ আবু সাঈদের মাকে নিয়ে ‘কটূক্তি’, পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা