প্রদীপ নিভে যাওয়া পরিবারটি দেখল আলোর মুখ

মোহাম্মদ আরজু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
 | প্রকাশিত : ১৫ মে ২০২৩, ১৫:৫৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার মঝিকাড়া গ্রামের রিকশাচালক অরুণ মিয়ার থাকার কোনও জায়গা ছিল না। স্ত্রী ও দুই প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে পরের বাড়িতে একটি একচালা ছাউনি ভাড়া নিয়ে কোনও রকম জীবন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার বড় ছেলের নাম মোছেন মিয়া (১৪) ও ছোট ছেলের নাম আবির (১২)। জন্মের পর টাইফয়েড জ্বরে তার ছোট ছেলে আবিরের বাম পা বিকলাঙ্গ হয়ে যায়, আর বড় ছেলে মোছেন মিয়া জন্মের পরই বাক প্রতিবন্ধী ও হাত পা বিকলাঙ্গ।

রিকশা চালিয়ে অল্প আয়ের সংসারে তিন বেলা ভাত জোগাড় করতে পারতেন না অরুণ, ছেলেদের চিকিৎসা তো দূরের কথা। এরই মাঝে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে জীবন যুদ্ধে চলা অবস্থায় হঠাৎ একদিন আবিরের দাদা, দাদি, বাবাসহ পরপর তিন দিনে তিনজনের মৃত্যু দেখে ওই প্রতিবন্ধী দুশিশু। বেঁচে থাকার আলো নিভে যায় তাদের। আবির পা খুড়িয়ে ভিক্ষা করে মা ভাইয়ের খাবার যোগার করত।

সম্প্রতি এই পরিবারের হৃদয়বিদারক ঘটনা সমাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তা দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামূল ছিদ্দিক এই অসহায় প্রতিবন্ধী পরিবারটি পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের হাতে তুলে দেন পাঁচ মাসের খাদ্য সামাগ্রী ও নগদ অর্থ। আর আবিরকে অপারেশন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনে জিননদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেনীতে ভর্তি করে দেন এবং মাথা গুঁজার ঠাই হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে জিনদপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিসহ একটি আধাপাকা ঘর উপহার দেন।

আবির ঢাকা টাইমসকে জানায়, লেখাপড়া করে সেও মানুষের সেবা করতে চায়। এ জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছে আবির।

জিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার ঢাকা টাইমসকে বলেন, তার (আবির) দায়িত্ব আমাদের ইউএনও মহোদয় নিয়েছেন। আবির লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী, আমরাও তার লেখাপড়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ খেয়াল রাখছি।

আরও পড়ুন: অধ্যাপক তাহের হত্যা: রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন ড. মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর

মানবিক বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন, সমাজে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হচ্ছে। যে পরিবারটিকে সহায়তা প্রদান করা হলো সেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিসহ তিন দিনে তিনজন মারা গেছেন। আমরা চেয়েছি পারিবারটির জন্য স্থায়ীভাবে কিছু একটা করে দিতে। এখন তারা সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসেছে। আবিরের মা শিউলী বেগমকে সেলাই প্রশিক্ষণ ও গাভী পালনের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৫মে/এসএম)

নবীনগর জিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস করছে আবির (ছবি: ঢাকাটাইমস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :