বগুড়ার শেরপুরে ঝড়ে ৩০ গ্রামে বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ জুন ২০২৩, ১৮:৩০

বগুড়ার শেরপুরে বুধবার বিকালে হঠাৎ ঝড়ে সিংহভাগ কাঁচা ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড কয়ে অন্তত ৩০টি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেইসঙ্গে উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা। এছাড়া ঝোড়ো বাতাসে আম, লিচু, ভুট্টা ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের কারণে ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে।

বুধবার বিকালে উপজেলার শাহবন্দেগী, মির্জাপুর ও খানপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যায়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শাহবন্দেগী ইউনিয়নে। রাতের কারণে ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহতার তেমন খবর পাওয়া না গেলেও বৃহস্পতিবার সকাল হতেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যা দেখে অনেকেই হতবাক বনে গেছেন। এদিকে প্রচণ্ড ঝড়ে টিনের চালার নিচে চাপা পড়ে ধর্মকাম এলাকায় আরজু মিয়া (২৫) গুরুতর আহত হন। তিনি স্থানীয় একটি ওয়েল্ডিং কারখানার শ্রমিক। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশকয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড তাপদাহ চলছে। এরইমধ্যে বুধবার বিকেলে হঠাৎ পুরো আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। এরপর উপজেলার ওই তিন ইউনিয়নের ওপর দিয়ে শুরু হয় প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি। পৌনে একঘণ্টার এই ঝড়ে শাহবন্দেগী ইউনিয়নের সাধুবাড়ী, মামুরশাহী, উচরং, ঘোলাগাড়ী, চকমুকন্দ, কানাইকান্দর, আন্দিকুমড়া, রহমতপুর, ফুলতলা, ধর্মকাম, শেরুয়াসহ অন্তত বিশটি গ্রাম এবং মির্জাপুর ও খানপুর ইউনিয়নের আরও ১০টি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এসব গ্রামের আধাপাকা ও টিনের তিন শতাধিক বাড়ি-ঘর লÐভÐ হয়ে গেছে।

চকমুকন্দ গ্রামের মতিউর রহমান বলেন, ঝড়ে তার বসতবাড়ির টিনের চালা উড়ে যায়। গাছপালা ভেঙে পড়ে লক্ষাধিক টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ধর্মকাম গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, আকস্মিকভাবে ঝড় শুরু হয়। এতে তার ওয়েল্ডিং কারখানার চারপাশের ইটের প্রাচীর ভেঙে পড়ছে। টিনের চালাও উড়ে গেছে। দশ থেকে বারো লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

শাহবন্দেগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হঠাৎ বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই যা নিরুপণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনসহ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরীর কাজ শুরু করেছেন। তাই এই মুহুর্তে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসেব দেওয়া সম্ভব নয়। তবে দুই শতাধিক বসতবাড়ির কম-বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন। একই কথা বলেন মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ জাহিদুল ইসলাম ও খানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পিয়ার হোসেন পিয়ার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার বলেন, মোটামুটি বোরো ফসল সব ঘরে উঠে যাওয়ায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এছাড়া নিদিষ্ট কিছু এলাকার ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যায়। তাই আম, লিচু ও ভুট্টার সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, বুধবারের ঝড়ে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে বেশকিছু ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছ উপড়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে তার দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৮জুন/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :