‘সোনার সংসার হারিয়ে এখন স্রোতের শেওলার মতো ঘুরছি’

এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী
  প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০২৩, ২০:৩৩
অ- অ+

ভাঙনকবলিত পদ্মার তীরে বসে বৃদ্ধ সুরুজ মিঞা বলেন, ‘আমার অনেক জমিজমা-ঘরবাড়ি ছিল। তিন বার ভাঙায় সবকিছু হারায় আমি এখন সর্বহারা। এই গ্রামে অন্যের জায়গায় ঠাঁই নিছিলাম। এখানেও নদী ভাঙা যাইতাছে। এরপর আমরা আর কোথায় গিয়ে দাঁড়াব। আমাদের দুঃখ বলার মতো কোনো জায়গা নাই। আশ্রয় ও সোনার সংসার হারিয়ে এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে স্রোতের শেওলার মতো ঘুরছি।’

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট এলাকাসহ পদ্মাপাড়ের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে পদ্মাপাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে।

দৌলতদিয়া ঘাট আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় নদী শাসন সম্পন্ন হলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটসহ গোটা গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকা ভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া ঘাট আধুনিকায়নের জন্য দৌলতদিয়ার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন দপ্তরে বাজেট বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। নির্দেশনা পেলেই কাজ শুরু হবে।

জানা যায়, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ। প্রতিদিন দুই ঘাটে কয়েক হাজার গাড়ি ফেরি পারাপার হয়। পাশাপাশি লঞ্চ দিয়ে পারাপার হয় হাজার হাজার যাত্রী। এদিকে দৌলতদিয়া ঘাট নদীভাঙনপ্রবণ এলাকা। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনের কবলে পড়ে পদ্মায় বিলীন হয় ঘাটসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের বহু মানুষের ঘরবাড়ি।

সরেজমিনে ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ২০০ মিটার উজানে অবস্থিত নতুনপাড়া গ্রাম। ওই গ্রামের নদীর তীর ভেঙে পড়ছে। ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে এসেছেন গ্রামবাসীদের অনেকেই।

এ সময় স্থানীয় শিউলি আক্তার বলেন, ‘আমার ঘরের পাশে ভাঙন শুরু হইছে। গাঙে পানির বেগ বাড়লেই ভাঙন আরও বাড়বে। তহন আর রক্ষা পামু না। আমরা গরিব মানুষ। ঘরবাড়ি ভাঙলে যাওনের জায়গা নাই।’

বিআইডাব্লিউটিএ এর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, বন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় নদীর তীর রক্ষায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘস্থায়ী নদী শাসন করা হবে। এতে নদীভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, লঞ্চঘাটসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রাম। প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হলেই ভাঙনরোধে স্থায়ীভাবে কাজ শুরু করা হবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সী বলেন, ‘আমরা নদী শাসনের জন্য বরাবরই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলেছি। ইতোমধ্যে ঘাট আধুনিকীকরণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি চলতি বছরের মধ্যেই নদী শাসনের জন্য দৌলতদিয়া ফেরিঘাট আধুনিকীকরণ কাজ শুরু হবে।’

(ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মানিকগঞ্জের সাবেক এমপি মমতাজ গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে অনিয়মের প্রমাণ পেল দুদক
কোতয়ালী এলাকায় বিশেষ অভিযান, মাদক কারবারিসহ গ্রেপ্তার ১৫
ফরিদপুরে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা