মেঘনার ভাঙনে বিলীনের পথে গজারিয়ার বড় কালীপুরা গ্রাম

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ জুলাই ২০২৩, ১৭:৩৯

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা মেঘনা তীরবর্তী কালীপুরা এবং তনু সরকারকান্দি গ্রামের কয়েকশো পরিবারের। গত পাঁচ দশকে অসংখ্যবার নদীর ভাঙনপ্রবণ এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশা স্থানীয়রা। সরেজমিনে মেঘনা নদীর তীরবর্তী ইমামপুর ইউনিয়নের বড় কালীপুরা এবং তনু সরকারকান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় বড় কালীপুরা পুরাতন জামে মসজিদসহ গ্রাম দুটির অন্তত ৭২টি পরিবার ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা আগেভাগে নিজের শেষ সম্বল টুকু অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। গত কয়েক বছরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরসহ নদী গর্তে বিলীন হয়ে গেছে অনেক স্থাপনা। বছরের পর বছর বিভিন্ন সরকারের আমলে জনপ্রতিনিধিরা এসব এলাকার মানুষদের শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেও তার বাস্তব আর না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন তারা। অন্যত্র ঘর সড়িয়ে নেওয়া মোজাফফর আলী বলেন, আগে ভাঙন কম ছিল তবে গত কয়েক বছর ধরে নদীর তীরবর্তী এলাকায় তীব্র নদী ভাঙন দেখা যাচ্ছে। তার বাড়িটিও ভাঙন প্রবণ এলাকায়। নদীতে ঢেউ বাড়লে নির্ঘুম রাত কাটে তাদের এই বুঝি বাড়ি নদীতে ভেঙে পড়লো। সেজন্য বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। তার মতো অন্তত পাঁচটি পরিবার চলতি বছর তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রাণী বেগম বলেন, মন্ত্রী-এমপিরা আসলো, আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেল, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলো না। দিনকে দিন আমাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। প্রতিবছরই সামান্য কিছু ত্রাণ সহায়তা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করে প্রশাসন। আমরা এর স্থায়ী প্রতিকার চাই।

স্থানীয় কৃষক রুপু মিয়া বলেন, গ্রামের অধিকাংশ মানুষ হয় কৃষক না হয় জেলে। আমাদের যদি সামর্থ্য থাকতো আমরা অনেক আগেই এখান থেকে চলে যেতাম। মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই দেখে বাধ্য হয়ে এখানে থাকছি। আর কতদিন? সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় এই বুঝি আমার বাড়িটি ভেঙে পড়লো। বাসায় ছোট ছোট বাচ্চা সাঁতার জানে না সব সময় চোখে চোখে রাখতে হয়। এভাবে আর কতদিন?

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। সরোজমিনে পরিদর্শন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমি বিষয়টি জানাবো।

বিষয়টি সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ড মুন্সীগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শংকর চক্রবর্তী বলেন, গজারিয়া উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী গ্রামগুলোর মধ্যে ইসমানীরচর এলাকার নদী তার রক্ষায় একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তারা। ইতোমধ্যে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু হবে। নদীর বড় কালীপুরা অংশে আপাতত কিছু করা যাচ্ছে না তবে ভাঙ্গণ তীব্র হলে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৭জুলাই/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :