প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পরিচয়ে প্রতারণা, বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার
বাবা প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস-২) পরিচয় দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের পদোন্নতি ও নিয়োগ দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা নিতেন। এ প্রতারণার সহযোগী ছিলেন ছেলে। পুলিশ অভিযুক্ত মজিবুর রহমান ও তার ছেলে জাহিদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২–এর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ গত শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে জাহিদুর ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে। এর পর জাহিদুরের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ভুয়া নিয়োগপত্র ও আটটি সিমকার্ড জব্দ করে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, বাবার ভুয়া পরিচয় ছাড়াও জাহিদুল নিজেকে জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা বলে পরিচয় দিতেন।
অভিযানের তদারক কর্মকর্তা ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ ঢাকা টাইমসকে জানান, জাহিদুর রহমান ও তার বাবা মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। রবিবার ওই মামলায় আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ডিবি কর্মকর্তা সাইফুর রহমান আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ হাফিজুর রহমান (লিকু) ডিবির সাইবার ক্রাইমকে জানান, মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি ও বিভিন্ন প্রকল্প পাইয়ে দেয়ার কথা বলে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে তা আত্মসাৎ করেছেন। পরে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের একটি দল প্রতারকদের অবস্থান শনাক্ত করে বাবা-ছেলেকে আটক করে।
ডিবি সূত্র জানায়, জাহিদুর উত্তরার একটি ইরেজি মাধ্যমে ‘ও লেভেল’ পর্যন্ত পড়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেন। এরপর মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। বিষয়টি জানতে পেরে জাহিদুরকে টাকা দেয়া বন্ধ করে দেন তার বাবা। এরপর জাহিদুর প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা পরিচয়ে প্রতারণা করতে থাকেন। অবশ্য তার বাবা মজিবুর রহমান বিভিন্ন ছদ্মনামে প্রতারণা করেন। তিনি নিজেকে বিভিন্ন সময় সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতেন।
ডিবির সাইবার ক্রাইমের কর্মকর্তারা বলেন, দুই মাস আগে জাহিদুর তার বাবা মজিবুরকে বিশ্বাস করাতে চান, তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে এবং তিনি তার বাবাকে এপিএসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। এরপর জাহিদুর তার অন্য একটি নম্বর দিয়ে তার বাবাকে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পরিচয় দিয়ে বলেন, জাহিদুরের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি-সংক্রান্ত কোনো কাজ জাহিদুরকে দিলে তিনি তা করে দেবেন। এর পর থেকে মজিবুর বিভিন্ন ব্যক্তিকে এপিএস-২ এর মাধ্যমে চাকরি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি ও পদোন্নতি দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতে থাকেন।
(ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/এএ/এফএ)