ঝালকাঠিতে ৩ কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ প্রাণহানি: তদন্ত প্রতিবেদন

ঝালকাঠি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১৬:৪৯

ঝালকাঠির ছত্রকান্দায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জনের প্রাণহানির ঘটনায় তিনটি কারণ শনাক্ত করেছে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি।

একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মামুন শিবলী।

মোহাম্মদ মামুন শিবলী জানান, দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির জন্য প্রথমত বাসটির চালকের খামখেয়ালিপনা, দ্বিতীয়ত চালকের অপেশাদারি আচরণ এবং তৃতীয়ত বিধি ভেঙে সড়কের পাশে বড় পুকুর খনন করা হয়েছিল।

দুর্ঘটনাকবলিত বাস বাশার স্মৃতির ফিটনেস থাকলেও চালক মোহন খানের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল হালকা গাড়ি চালানোর। কিন্তু তিনি বাসের মতো একটি ভারি যানবাহন চালাচ্ছিলেন দীর্ঘদন ধরেই।

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মামুন শিবলী জানান, তদন্তে আমাদের কাছে প্রতিয়মান হয়েছে সড়কের পাশের বড় ও গভীর পুকুরটি মৃত্যুকূপ হিসেবে রূপ নিয়েছে। ঝালকাঠি থেকে পিরোজপুর বা মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা সড়কটি অত্যন্ত পুরাতন। এই সড়ক প্রশস্ত না করায় জমির ব্যক্তি মালিকানারা সেখানে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করেছে। সড়কটির দুই পাশে যদি মহাসড়কের মতোই ১০/১২ ফুট জমি অধিগ্রহণ করা থাকতো তাহলে দুর্ঘটনা ঘটলেও এত প্রাণহানি হতো না।

মোহাম্মদ শিবলী মামুন বলেন, বাস মালিক পক্ষের উচিত কার হাতে গাড়ি দিচ্ছেন তার যথাযথ মনিটরিং করা। তদন্তকারী আরও দুটি সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে প্রকৃতপক্ষে চালক মোহন খানের খামখেয়ালীপনায় দুর্ঘটনা ও ১৭ জনের প্রাণহানি হয়। দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার আগ মুহূর্তে বাসের চালক তার সিটে বসে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা নিয়ে তর্ক করছিলেন আর মোবাইল চালাচ্ছিলেন বলেও তদন্তে উঠে আসে। এছাড়া বাস মালিক সমিতি ও মালিক পক্ষ আয় বাড়ানোর ওপর জোর দিলেও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, পরিবহন চলাচলে নির্দেশনা মেনে চলতে গড়িমসির কথা উঠে এসেছে। এসব প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে, সম্প্রতি সড়কে গাড়ির চাপ বাড়লেও সে অনুপাতে সড়ক প্রশস্ত না করার প্রসঙ্গ।

উদ্ধারকারী সংস্থা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ঝালকাঠির উপ-পরিচলক ফিরোজ কুতুবী জানান, আমাদের তদন্ত কাজ প্রায় শেষ। এখন প্রতিবেদন সম্পূর্ণ করে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। তদন্তে দুর্ঘটনার কারণ আর প্রতিবন্ধকতা সব বিষয় উঠে এসেছে।

ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম বলেন, প্রতিবেদন পেয়েছি। সুপারিশ অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া করা হবে।

এদিকে ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের হয়েছে।

এরমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তিনি জানান, নিহতদের দাফনকার্যে সহায়তাপূর্বক আইজিপি স্যারের বরাদ্দের ১ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২২ জুলাই সকাল ১০টার দিকে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ঝালকাঠি যাওয়ার উদ্দেশে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ছত্রকান্দা নামক স্থানে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের একটি পুকুরে পড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত হন। আহত হন ৩৫ জন। বাসটিতে যাত্রী ছিল ৬০ জনেরও বেশি বলে যাত্রীরা।

(ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :