নদী ভাঙনের কবলে সংযোগ সড়ক, ব্রিজ ব্যবহারে ভোগান্তি

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, শেরপুর
  প্রকাশিত : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১৫:১১| আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১৫:১২
অ- অ+

ব্রিজ আছে, তবে নদী ভাঙনের কবলে ব্রিজের পূর্ব পাড়ের সংযোগ সড়কের প্রায় ১৫ মিটার জায়গা ভেঙে যাওয়ায় তা ব্যবহারে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তিন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে। পূর্ব পাশের এপ্রোজ রাস্তাটি ভেঙে গেছে প্রায় ৭ বছর আগে।

শেরপুরের শ্রীবরদীতে মৃগী নদীর ওপর ভারেরা-আড়ালিয়াকান্দা সড়কের এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে ২০০৪ সালে। তিনটি গ্রামের মানুষের যাতায়াত ও বৃহত্তর বয়শা বিল থেকে সহস্রাধিক একর জমির কৃষি ফসল ঘরে আনার জন্য একমাত্র রাস্তা এটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর গতিপথ কিছুটা পরিবর্তন হয়ে পূর্বদিকের পার ভাঙছে। অপরদিকে পশ্চিম দিকে নদীর কিছু অংশ ভরাট হয়ে গেছে। ব্রিজটি নির্মাণের সময় দুই পাশের পার রক্ষায় স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা যায়, ২০১৬ সালে পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে পূর্ব পাড়ের এপ্রোজ রাস্তাটি ভেঙে যায়। স্থানীয় উদ্যোগে ও ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় বাঁশ এবং কাঠ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে ব্রিজের সঙ্গে রাস্তা সংযুক্ত করে কোনোমতে পারাপার হচ্ছেন লোকজন। কোন বিকল্প উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী। ইতোমধ্যেই পারাপার হতে গিয়ে খাদে পড়ে পথচারীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

স্থানীয়রা জানায়, ৭ বছর চলছে। অনেকেই অনেকবার আশ্বাস দিলেও তা আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে সেতুতে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা কাঠের মাচা আর আংশিক লরবরে বাঁশের সাঁকো। গ্রামের দুই শতাধিক ছোট ছোট শিক্ষার্থীকে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রোগী ও মহিলারা চরম ভোগান্তিতে আছেন। এলজিইডির চরম অবহেলায় ভোগান্তিতে আছে জনসাধারণ।

স্থানীয় দোকানদার ফরহাদ আলী জানান, ‘আমি ভারেরা বাজারে ব্যবসা করি। নদীর ওপারে আড়ালিয়া কান্দায় আমার বাড়ি। আমাকে প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার আসা-যাওয়া করতে হয়। খুবই কষ্টে আছি।’

স্থানীয় যুবক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এখানে এসে কয়েক দফায় মানুষের দুর্ভোর দেখে গেছেন। কিন্তু তাদের এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেই। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই।’

ভারেরা ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, স্কুল-প্রাইভেট-কোচিং এর জন্য আমাকে কমপক্ষে তিন বার আসা-যাওয়া করতে হয়। আমাদের হাত পা ভাঙতে পারে। রাতে যাওয়া আরও কষ্টকর। দ্রুত রাস্তা করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

স্থানীয় কৃষক আব্দুল মিয়াসহ অনেকেই বলেন, সেতুর পূর্ব পাড়ের মানুষের প্রায় এক হাজার একর জমি আছে নদীর ওপারে। পশ্চিম পাশের দুইটি গ্রামের প্রায় চার হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। এছাড়াও এলাকার প্রায় দেড় থেকে ২শ শিক্ষার্থীর যাতায়াতের পথও এটি। এখানে গর্তে পড়ে মানুষ মারাও গেছেন। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

গোসাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজামাল আশিক বলেন, আমি নির্বাচিত হবার পর থেকে নিজস্ব অর্থায়নে কয়েকবার এই সংযাগ সড়ক মেরামত করেছি এবং এলজিইডি প্রকৌশলীকেও আনা হয়েছে। কিন্তু নদী পূর্ব দিকে সরে আসায় রাস্তা টিকছে না। স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে সমস্যাটির স্থায়ী সমাধানের জন্য আহ্বান জানান তিনি।

এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি নদী শাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

খরস্রোতা নদী হওয়ায় নদী শাসনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, দ্রুত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রিজটির সংযোগ সড়কের সমস্যা সমাধান করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মানিকগঞ্জের সাবেক এমপি মমতাজ গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে অনিয়মের প্রমাণ পেল দুদক
কোতয়ালী এলাকায় বিশেষ অভিযান, মাদক কারবারিসহ গ্রেপ্তার ১৫
ফরিদপুরে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা