পাট নিয়ে ভোগান্তিতে জামালপুরের চাষিরা, দাম নিয়ে হতাশ

মো. ইমরান মাহমুদ, জামালপুর
 | প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:০৫

এক সময়ের সোনালি আঁশ পাট নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন জামালপুরের পাট চাষিরা। বাজারে পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় পাইকারদের খপ্পরে পড়ে পাট বিক্রিতে লোকসানের মুখে পড়ছেন চাষিরা। এতে করে উৎপাদন খরচও উঠছে না তাদের।

জামালপুর জেলার হাট-বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১৯০০-২২০০ টাকা। সার, বীজ, শ্রমিক খরচ ও সেচ দিয়ে উৎপাদনের পর, বাজারেও দাম ভালো না পাওয়ায় লোকসানের মুখে চাষিরা।

জামালপুরে দেওয়ানগঞ্জ, বকশিগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ি উপজেলায় বেশি পাট চাষ হয়। এ অঞ্চলে দেশি ও তোষা দুই জাতের পাট বেশি চাষ হয়ে থাকে। এবছর পাটের উৎপাদনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

জামালপুরের ইসলামপুরের গুঠাইল ও দেওয়ানগঞ্জের ঝালুরচর বাজারে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এখানে সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। প্রতি হাটে প্রায় তিন হাজার মণ পাট কেনা বেচা হয় এ হাটে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা তাদের উৎপাদিত পাট বিক্রি করতে নিয়ে আসে। সরকারি-বেসরকারি ক্রয় কেন্দ্রে সরাসরি পাট বিক্রির কোন সুযোগ না থাকায় কৃষকরা পাইকারদের খপ্পরে পড়ে পাট বিক্রি করছেন।

বাহাদুরাবাঘাট এলাকার কৃষক মো. আইয়ুব নবী বলেন, ১০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করছি। পাট চাষ করে এখন আমাদের পোষাচ্ছে না। গত বছরের চেয়ে অর্ধেকদামে পাট বিক্রি করতে হচ্ছে। পাট চাষিরা লোকসানে পড়ছে। বাজারে ১৭০০ থেকে ২১০০ টাকা মণ পাট বিক্রি হচ্ছে। এবার পাটের চাহিদাও কম। ব্যবসায়ীরা পাট কিনছেন না, পাট চাষিদের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি দেয়া উচিত। এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষক পাট চাষ করা বন্ধ করে দিবে।

বকশিগঞ্জ উপজেলার পাট ব্যবসায়ী ফরিদ আহাম্মেদ বলেন, সরকারি ও বেসরকারি মিলে পাটের চাহিদা নেই। তারা পাট কিনছে না। পাট এখনও অনেকের ঘরে মজুদ আছে। এবার আবারও পাট কিনেছে। কি যে হবে জানি না। এবার আমরা পাট নিয়ে খুবই শঙ্কার মধ্যে আছি।

এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আলমগীর আজাদ বলেন, এ বছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। তবে কৃষকরা পাট বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। সামনে পাটের দাম আরও বাড়বে।

জেলা মুখ্য পাট পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সরকারি মিলগুলো বন্ধ হওয়ার ফলে পাটের দাম কমে গেছে। বেসরকারি মিলগুলো তাদের ইচ্ছে মতো দামে পাট কিনছেন। তারা সরকারের নির্ধারিত মূল্যে পাট কিনছেন না। সরকার বাজার মনিটরিং করছেন। এ নিয়ে পাটের বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৯ হাজার ৯৭০ হেক্টর। আর অর্জিত হয়েছে ২৬ হাজার ৭০৪ হেক্টর জমিতে। আর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পাটের চাষ হয়েছে ৫০৪৪ হেক্টর জমিতে।

(ঢাকা টাইমস/০১অক্টোবর/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :